২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে দেশে ইঞ্জিন সংযোগ করা মোটরসাইকেলের যন্ত্রাংশ আমদানিতে ডিউটি ও সম্পূরক শুল্ক অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। ২৫০ সিসির নিচের সব মোটরসাইকেলের ওপর নীতি কার্যকর থাকবে। এর ফলে দেশে ব্যবহৃত অধিকাংশ মোটরসাইকেলেরই দাম কমবে।
বর্তমানে দেশে মোটরসাইকেল উৎপাদনকারী কিছু প্রতিষ্ঠান ইঞ্জিন সংযোজন করছে। এ ধরনের মোটরসাইকেল উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানকে উৎসাহ প্রদানের জন্য মোটরসাইকেলের ইঞ্জিন ইন সিকেডিয়ের পার্টসসমূহকে মোটরসাইকেল উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের উপকরণ আমদানি সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপনে অন্তর্ভুক্ত করার প্রস্তাব করা হচ্ছে।
উল্লিখিত পণ্যসমূহের আমদানির বিপরীতে আরোপনীয় তিন শতাংশের অতিরিক্ত আমদানি শুল্ক এবং সমুদয় রেগুলেটরি ডিউটি ও সম্পূরক শুল্ক হতে অব্যাহতি প্রদান করার প্রস্তাব করা হয়েছে।
২০২৪-২৫ অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত বাজেটের আকার ধরা হয়েছে সাত লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকা। এবার বাজেটে ঘাটতির পরিমাণ কমছে। চলতি অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের তুলনায় আগামী অর্থবছরের বাজেটে ঘাটতি কম ধরা হয়েছে পাঁচ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকা। অনুদান ছাড়া বাজেট ঘাটতি ধরা হয়েছে দুই লাখ ৫৬ হাজার কোটি টাকা। তবে, অনুদানসহ সামগ্রিক ঘাটতি দাঁড়াবে দুই লাখ ৫১ হাজার ৬০০ কোটি টাকা। অর্থাৎ আগামী অর্থবছর চার হাজার ৪০০ কোটি টাকা অনুদান পাওয়ার লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে।
ঘাটতি মেটাতে বৈদেশিক ঋণের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে এক লাখ ২৭ হাজার ২০০ কোটি টাকা। বৈদেশি ঋণ পরিশোধ করা হবে ৩৬ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। এতে নিট বৈদেশিক ঋণ দাঁড়াবে ৯০ হাজার ৭০০ কোটি টাকা। এ ছাড়া অভ্যন্তরীণ খাত থেকে ঋণ নেওয়া হবে এক লাখ ৬০ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে নেওয়া হবে এক লাখ ৩৭ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। যার ৭২ হাজার ৬৮২ কোটি টাকা দীর্ঘমেয়াদি ঋণ এবং ৬৪ হাজার ৮১৮ কোটি টাকা স্বল্পমেয়াদি। ব্যাংকবহির্ভূত ঋণ নেওয়া হবে ২৩ হাজার ৪০০ কোটি টাকা। সঞ্চয়পত্র বিক্রির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১৫ হাজার ৪০০ কোটি টাকা।
২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটে ঋণের সুদ পরিশোধের ব্যয় ধরা হয়েছে এক লাখ ১৩ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। এর মধ্যে অভ্যন্তরীণ ঋণের সুদ ৯৩ হাজার কোটি টাকা। আর বৈদেশিক ঋণের সুদ ২০ হাজার ৫০০ কোটি টাকা।
বাজেটে রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে পাঁচ লাখ ৪১ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) লক্ষ্যমাত্রা চার লাখ ৮০ হাজার কোটি টাকা। এনবিআর বহির্ভূত কর ধরা হয়েছে ১৫ হাজার কোটি টাকা। করব্যতীত প্রাপ্তির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৪৬ হাজার কোটি টাকা।
তবে, ২৫০ সিসির ঊর্ধ্বসীমার ইঞ্জিন ক্ষমতাসম্পন্ন মোটরসাইকেলের জন্য উক্ত যন্ত্রাংশগুলো আমদানির ক্ষেত্রে আমদানি শুল্ক ১০ শতাংশ ধার্য করার সুপারিশ করা হচ্ছে। একই সঙ্গে বাংলাদেশ কাস্টমস ট্যারিফ এ সংশ্লিষ্ট পণ্যের বিপরীতে বিদ্যমান আমদানি শুল্ক ৫ শতাংশ হতে বাড়িয়ে ১৫ শতাংশ ধার্য করার সুপারিশ করেন অর্থমন্ত্রী।
বৃহস্পতিবার (৬ জুন) জাতীয় সংসদে স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপস্থিতিতে এই বাজেট প্রস্তাব উপস্থাপন করেন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী। তার আগে প্রস্তাবিত বাজেট মন্ত্রিসভার অনুমোদন হয় এবং পরে ওই প্রস্তাবে সই করেন রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন।
নানা সংকটের মধ্যেও নতুন অর্থমন্ত্রী স্বপ্ন দেখছেন স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে। এজন্য এবারের বাজেটের প্রতিপাদ্য ‘সুখী, সমৃদ্ধ, উন্নত ও স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে অঙ্গীকার’।