শেখ হাসিনা সরকারের পদত্যাগের চারদিনের মাথায় আজ বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) রাতে গঠিত হচ্ছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। শান্তিতে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূস এই সরকারে প্রধান উপদেষ্টা হচ্ছেন। এই সরকারের সদস্য সংখ্যা ১৭ জন। বাকি ১৬ জন উপদেষ্টাদের মধ্যে শিক্ষক, আইনজীবী, সুশীল সমাজ, আলেম সমাজ ও কোটা আন্দোলনের সমন্বয়কসহ বিভিন্ন শ্রেণির প্রতিনিধিরা রয়েছেন।
১৬ উপদেষ্টা হচ্ছেন— বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর সালেহ উদ্দিন আহমেদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ড. আসিফ নজরুল, মানবাধিকার সংগঠন অধিকারের সম্পাদক আদিলুর রহমান খান, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ও সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল এ এফ হাসান আরিফ, সাবেক পররাষ্ট্র সচিব তৌহিদ হোসেন, বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) প্রধান নির্বাহী ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক মো. নাহিদ ইসলাম ও আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া, সাবেক নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন, সাবেক রাষ্ট্রদূত ও পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান সুপ্রদীপ চাকমা, উন্নয়ন বিকল্পের নীতি নির্ধারণী গবেষণার (উবিনীগ) নির্বাহী পরিচালক ফরিদা আখতার, জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের সাবেক পরিচালক ডা. বিধান রঞ্জন রায়, হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের সাবেক নায়েবে আমীর আ ফ ম খালিদ হাসান, গ্রামীণ ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক নুরজাহান বেগম, ব্রতীর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শারমিন মুরশিদ ও মুক্তিযুদ্ধে অপারেশন জ্যাকপটের উপ-অধিনায়ক ফারুক-ই-আযম বীর প্রতীক।
গত সোমবার (৫ আগস্ট) শেখ হাসিনার পদত্যাগের পর দেশের মানুষের কৌতুহল ছিল, অন্তবর্তীকালীন সরকারের প্রধান কে হবেন তা নিয়ে। শান্তিতে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে প্রধান উপদেষ্টা করার সিদ্ধান্তের পরও জল্পনা-কল্পনা ছিল উপদেষ্টাদের নামের বিষয়ে। আজ সন্ধ্যায় জানা গেলো, অন্তর্বতীকালীন সরকারের বাকি সদস্য কারা হচ্ছেন।
আজ দুপুর ২টা ১০ মিনিটে ইউনূসকে বহনকারী এমিরেটস এয়ারলাইনসের ফ্লাইটটি ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে। বিমানবন্দরে তাকে সংবর্ধনা জানায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন।
এরপর ব্রিফিংয়ে ড. ইউনূস বলেন, আজকে আমাদের গৌরবের দিন। যে বিপ্লবের মাধ্যমে বাংলাদেশ বিজয় দিবস সৃষ্টি করলো, সেটাকে সামনে রেখে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। এটা সম্ভব করেছে তরুণ সমাজ, তাদের প্রতি আমার সমস্ত প্রসংশা ও কৃতজ্ঞতা। এরা এ দেশকে রক্ষা করেছে, পুনর্জন্ম দিয়েছে। এই পুনর্জন্মে যে বাংলাদেশ পেলাম, তা যেন অত্যন্ত দ্রুত গতিতে এগিয়ে যেতে পারে, এটিই হলো আমাদের শপথ। সেটি আমরা রক্ষা করতে চাই। এটিই আমাদের শপথ।
আজ রাত নয়টায় বঙ্গভবনে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সদস্যরা শপথ নেবেন। এই অনুষ্ঠান আয়োজনের প্রস্তুতি চূড়ান্ত করেছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। শপথ নেয়ার পর রাজধানীর রমনা এলাকায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় উঠবেন ড. ইউনূস। দায়িত্ব পালনকালে তিনি সেখানেই থাকবেন। এ জন্য যমুনা প্রস্তুত করা হচ্ছে।