ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পাওয়া নাহিদ ইসলাম শুক্রবার (৯ আগস্ট) বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এ কথা বলেছেন।
তিনি বলেন, “আমি জানতে আগ্রহী, কেন তিনি (হাসিনা) দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন। আমরা তার অধীনে যে সমস্ত হত্যাকাণ্ড ঘটেছে তার বিচার করব। এটি আমাদের আন্দোলনের অন্যতম দাবি ছিল। এমনকি যদি তিনি ফিরে না আসেন, আমরা তাকে ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে কাজ করব।”
সরকারি চাকরিতে বৈষম্যমূলক কোটা পদ্ধতির বিরুদ্ধে জুলাই মাসে শুরু হওয়া ছাত্রদের আন্দোলন ক্রমেই এক দফার আন্দোলনে পরিণত হয়, যেখানে বিগত ৩০ বছরের মধ্যে ২০ বছর ক্ষমতায় থাকা ‘স্বৈরাচারী’ শেখ হাসিনার পদত্যাগ দাবি করা হয় ।
এ আন্দোলনে সারাদেশে ছাত্র-জনতা, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য ও সরকার দলীয় অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীদের মধ্যকার সংঘাতে প্রায় প্রায় ৩০০ জন নিহত হন, যাদের বেশিরভাগই বিশ্ববিদ্যালয় এবং কলেজের ছাত্র ছিল।
শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় সম্প্রতি এক সংবাদমাধ্যমে সাক্ষাৎকার দেওয়ার সময় বলেছেন, বাংলাদেশে নির্বাচনের ঘোষণা দেওয়া হলে হাসিনা ভারত থেকে দেশে ফিরে আসবেন।
বাংলাদেশের প্রধান বিরোধী দল তিন মাসের মধ্যে নির্বাচন আয়োজন করার দাবি জানিয়েছে।
এ ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থানরত সজীব ওয়াজেদ জয় এর কাছে মন্তব্যের অনুরোধ করা হলেও তিনি তাতে সাড়া দেননি। মন্তব্যের জন্য ভারতে অবস্থানরত শেখ হাসিনার সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
একজন ছাত্রনেতা আবু বকর মজুমদার পৃথকভাবে রয়টার্সকে বলেছেন, তারা চান যে হাসিনা ফিরে আসুক এবং বিচারের মুখোমুখি হোক।
নাহিদ ইসলাম বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের অন্যতম প্রধান অগ্রাধিকার একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজন করা যেহেতু বিরোধীরা গত নির্বাচন বয়কট করেছে। পাশাপাশি পূর্ববর্তী সরকারের সন্দেহভাজন দুর্নীতির তদন্ত করাকেও অন্তর্বর্তী সরকার অগ্রাধিকার দেবে বলে জানিয়েছেন নাহিদ।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে নির্বাচন আয়োজনের আগে নির্বাচনী ও সাংবিধানিক সংস্কার প্রয়োজন। তাই পরবর্তী নির্বাচন কবে হবে তা স্পষ্ট নয়। তিনি কোন নির্দিষ্ট সময়সীমার কথা উল্লেখ করেননি।
একদিন প্রধানমন্ত্রী হতে চান কিনা– নাহিদের কাছে এমন প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, “আমি পরবর্তীতে কী হব তা বাংলাদেশের জনগণের ওপর নির্ভর করে।”
তিনি বলেন, “ভারত শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তুলেছিল, বাংলাদেশের সমস্ত জনগণের সঙ্গে নয়।”
তিনি আরো বলেন, “আমরা ভারতের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক চাই। ভারতেরও নিজের পররাষ্ট্রনীতির দিকে নজর দেওয়া উচিত। নাহলে এটি সমস্ত দক্ষিণ এশিয়ার জন্য সমস্যা হয়ে দাঁড়াবে।”