এবার পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, ‘অনেকে ভাবছেন, বাংলাদেশের মতো এখানেও সরকার ফেলে দেবে। আমি ক্ষমতায় মায়া করি না।’
আরজি কর আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে কেউ কেউ বাংলাদেশের শেখ হাসিনার সরকারের বিরুদ্ধে চলা আন্দোলনের তুলনা টানতে শুরু করেছেন। একাধিক বিরোধী দলের নেতারা যখন বাংলাদেশের আদলে স্লোগান বানাতে শুরু করেছেন, একই ধরনের প্রচার যখন সংবাদমাধ্যমেও চলছে, তখন ভারতের স্বাধীনতা দিবসের প্রাক্কালে বুধবার তিনি এ কথা বলেছেন।
উত্তর কলকাতার গুরুত্বপূর্ণ স্বাস্থ্য কেন্দ্র আরজি কর হাসপাতালে গত সপ্তাহে একটি চিকিৎক ধর্ষণ ও হত্যার শিকার হন। সিসিটিভি ফুটেজের বদৌলতে গত শুক্রবার প্রকাশ্যে আসে পুরো বিষয়টি। এরপর থেকে পশ্চিমবঙ্গসহ পুরো ভারতে চলছে প্রতিবাদ।
বুধবার বেহালায় প্রাক-স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখান থেকেই আরজি করের ঘটনা এবং তার প্রতিবাদ আন্দোলন প্রসঙ্গে বেশ কিছু কথা বলেছেন তিনি।
মমতা বলেছেন, ‘আরজি করের ঘটনা নিয়ে সিপিএম এবং বিজেপি রাজনীতি করছে। বাংলাদেশে একটা ঘটনা ঘটে গিয়েছে। অনেকে ভাবছেন, বাংলাদেশের ঘটনা টেনে এনে এখানেও ক্ষমতা দখল করবেন। কিন্তু মনে রাখবেন, আমি ক্ষমতার মায়া করি না। যত দিন বাঁচব, মানুষকে ন্যায়বিচার এনে দেব। এই ঘটনা জানার পরেও আমি পুলিশকে দিয়ে অনেক কাজ করিয়েছিলাম। কিন্তু ওরা হাই কোর্টে গেলেন।’
উল্লেখ্য, আরজি করের ঘটনা নিয়ে হাই কোর্টে একাধিক জনস্বার্থ মামলা করা হয়েছিল। মঙ্গলবার তার শুনানিতে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি।
আরজি করের ঘটনার প্রতিবাদে যে আন্দোলন চলছে, তা বিশেষ রাজনৈতিক দল পরিকল্পিত ভাবে করাচ্ছে, মন্তব্য করেন মমতা।
তিনি বলেন, ‘যারা আন্দোলন করছেন, তারা অধিকাংশই ছাত্রছাত্রী নন। রাজনৈতিক দল এটা পরিকল্পিতভাবে করছে। ভাবছে মমতাকে ক্ষমতা থেকে সরাবে। ওরা জানে না, মমতার সরতে আসলে এক সেকেন্ড লাগে। ঠিক যে ভাবে আমি রেল থেকে সরে এসেছিলাম। অন্যায়ের কাছে আমি মাথা নত করি না, করব না। দরকার হলে মানুষের কাছে মাথা নত করব, কিন্তু কোনো রাজনৈতিক দলের কাছে নয়।’
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশে কোটা সংস্কারের দাবিতে জুলাইয়ে ব্যাপক ছাত্র আন্দোলন শুরু হয়। আন্দোলনের জেরে ৫ আগস্ট ক্ষমতা ছেড়ে দিয়ে দেশ থেকে পালিয়ে যান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।