এবার দেশের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা ধ্বংস করে ফ্যাসিবাদ কায়েম, পিলখানায় সেনা অফিসার হত্যা, শাপলা চত্বরে আলেম হত্যাসহ সাম্প্রতিক ছাত্র-জনতার আন্দোলনে গণহত্যার মাস্টার মাইন্ড শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে এনে বিচারসহ জড়িত সবার বিচার ও গণহত্যায় জড়িত আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ ও যুবলীগকে নিষিদ্ধের দাবিতে গণঅবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে গণ অধিকার পরিষদ।বৃহস্পতিবার সকাল ১১টায় দলটির অস্থায়ী কার্যালয়ের সামনে এ অবস্থান কর্মসূচি শুরু হয়ে দুপুর ২টায় শেষ হয়। পরে সেখান থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের হয়ে দৈনিক বাংলা মোড়, পল্টন মোড় ও কাকরাইল মোড় ঘুরে বিজয়নগর পানির ট্যাংকের মোড়ে এসে শেষ হয়।
অবস্থান কর্মসূচিতে গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর বলেন, ‘ছাত্র-জনতার ওপর গণহত্যার মূল পরিকল্পনাকারী শেখ হাসিনাকে বিচারের মুখোমুখি করতে হবে, তাকে ফাঁসি দিতে হবে।
হামলাকারীদের পরিচয় চিহ্নিত করে সব অপরাধীর বিচার করতে হবে। ছাত্রলীগ, যুবলীগ ছাত্র-জনতার ওপর নৃশংস যে হত্যা চালিয়েছে তার জন্য বিশ্বের কাছে এই সন্ত্রাসী সংগঠনগুলোকে নিষিদ্ধের দাবি তুলতে হবে। মনে রাখতে হবে, কোনো অপরাধী ছাড় পাবে না। ইতোমধ্যে অনেকেই ধরা পড়েছে, আরো অনেকেই ধরা পড়বে।
একজনও ছাড় পাবে না।’তিনি বলেন, ‘সালমান এফ রহমান ও আনিসুর রহমানকে আটক করেছে এক ব্যবসায়ী হত্যাকাণ্ডের মামলায়। ধানমণ্ডির সেই হত্যাকাণ্ডের কোনো প্রমাণ নেই, এতে করে এসব মামলায় সহজে খালাস পেতে পারেন। তাই যেসব হত্যাকাণ্ডের প্রমাণ আছে সেগুলোর বিষয়ে মামলা করতে হবে।
ভিপি নুর বলেন, ‘সুবিধাবাদী দল জাতীয় পার্টিকেও নিষিদ্ধ করতে হবে। এই দালাল পার্টি সব সময় জনগণের বিপক্ষে গিয়ে আওয়ামী লীগের কাছ থেকে সুবিধা নিয়েছে। এই জাতীয় পার্টি বাংলাদেশে রাজনীতি করার অধিকার রাখে না। এই ভাইরাস পার্টি যেন আগামীতে রাষ্ট্রের কোনো আলাপ-আলোচনায় অংশগ্রহণ করতে না পারে সেটা নিশ্চিত করতে হবে।’
নুর আরো বলেন, ‘দেশে ইতোমধ্যে নব্য দখলদারের দেখা মিলেছে।
মানুষের বাড়িঘর দখল করছে, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান দখল করছে, এক সাইনবোর্ড নামিয়ে আরেক সাইনবোর্ড লাগাচ্ছে, এই দখলদারির জন্য তো ছাত্র-জনতা জীবন দেয়নি। আমরা স্পষ্ট করে বলি, এসব চাঁদাবাজি চলবে না, এসব কিছু জনগণ মেনে নেবে না।’গণ অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মো. রাশেদ খান বলেন, ‘আওয়ামী লীগের অতীতের সব ইতিহাস বিলীন হয়ে গেছে এই গণহত্যার মাধ্যমে। কেউ অপরাধ করার পর তার অতীত বিবেচনায় এনে মাফ করে দেওয়া যায় না। সুতরাং ১৫ বছরের গুম, খুন ও গণহত্যার দায়ে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করতে হবে। সাঁড়াশি অভিযান চালিয়ে খুনিদের গ্রেপ্তার করতে হবে। প্রশাসনের যারা আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় রেখেছিল, দুর্বৃত্তায়ন করেছে, তাদের চাকরিচ্যুত করে বিচারের মুখোমুখি করতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘ভারত থেকে শেখ হাসিনাকে ফিরিয়ে এনে বিচারের মুখোমুখি করতে হবে। তিনি তার লোভের কারণে দেশটাকে শেষ করে দিয়েছেন। একজন খুনি কিভাবে পালিয়ে গেলন? খুনিদের বিচার বাংলার মাটিতে করতেই হবে। এই রাষ্ট্রের যাবতীয় সংস্কার ছাড়া আমাদের মুক্তি নেই। এই সরকারকে রাষ্ট্রের মেরামত করতে হবে।’
গণ অধিকার পরিষদের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহফুজুর রহমান ও রবিউল হাসানের সঞ্চালনায় আরো বক্তব্য দেন উচ্চতর পরিষদের সদস্য আবু হানিফ, শাকিল উজ্জামান, জসিম উদ্দিন আকাশ, ঢাকা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক তোফাজ্জল হোসেন, প্রচার সম্পাদক শহিদুল ইসলাম, আইন সম্পাদক অ্যাডভোকেট শওকত, মহানগর উত্তরের সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহিম, যুব অধিকার পরিষদের সভাপতি মনজুর মোর্শেদ মামুন, সাধারণ সম্পাদক নাদিম হাসান, শ্রমিক অধিকার পরিষদের সভাপতি আব্দুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক সুহেল রানা সম্পদ, ছাত্রনেতা নওয়াজ খান বাপ্পি প্রমুখ