যদিও এভাবে এখনও চটেনি কোনও তারকা, যতটা প্রকাশ্য হয়েছেন টিভি নায়িকা মুমতাহিনা টয়া। অধিকারও রয়েছে বটে, কারণ তিনিও ছিলেন নিজের মতো করে ছাত্র-জনতার পাশে আন্দোলনের দিনগুলোতে। তারচেয়ে বড় বিষয়, অন্তর্বর্তী সরকার তথা সমন্বয়কদের বিভিন্ন কর্মকাণ্ড নিয়ে তিনিই প্রথম প্রকাশ্য সমালোচনার পতাকা তুলেছেন সোশ্যাল হ্যান্ডেলে।
১৬ আগস্ট স্পষ্ট ভাষায় টয়া বলেছেন, ‘বাকস্বাধীনতার জন্য লড়াই হলো, কিন্তু প্রয়োগ করা এখনও যাচ্ছে না।’
শুক্রবার এক ফেসবুক স্ট্যাটাসে টয়া আরও লিখেছেন, ‘আমি ভাই অনলাইনে শো অফ করে আন্দোলন করিনাই। রাস্তায় অনেক আগে থেকেই ছিলাম। আমি অতো বড় কেউ না, তাই অতো বেশি কভারেজ পাইনাই।’
টয়ার প্রতিক্রিয়ায় স্পষ্ট, ‘যেটা অন্যায় সেটাকে অন্যায় বলেছি এবং বলছি।’ তার অর্থ তিনি এই সরকারের সমালোচনাও করে যাবেন নিয়মিত, তাতে তিনি পিছ পা হবেন না। তিনি মনে করেন, বাকস্বাধীনতার জন্যই তো এই আন্দোলন ও বিজয়।
তার ভাষায়, ‘‘৫ আগস্টের আগে বলেছি এখনও বলছি, ‘সমালোচনা করলেই সে ঐ দলের লোক বা সেই দলের লোক, দালাল, চামচা- এসব বলা বন্ধ করতে হবে’। ১৬ বছর বলিনাই কথা, এটা আমাদের বড় ভুল। আজকে থেকে এ ভুল শুধরাতে চাই। গঠনমূলক আলোচনা ও সমালোচনা শিখতে এবং করতে চাই।”
ফেসবুকে এমন কড়া ভাষায় স্ট্যাটাস দেওয়ার পর যথারীতি বড় একটি গ্রুপ টয়ার সমালোচনা শুরু করেন মন্তব্যের ঘরে এসে। কিন্তু ঠিক কী ভেবে কিংবা কোন ঘটনার প্রেক্ষিতে টয়া এমন প্রতিক্রিয়া জানালেন সোশ্যাল হ্যান্ডেলে। সেটি প্রসঙ্গে স্থানীয় সংবাদমাধ্যমকে টয়ার ভাষ্য এমন, ‘আগে ভিন্নমতের মানুষকে দমন করার একটা মানসিকতা দেখেছি, যা থেকে আমরা মুক্ত হতে চেয়েছি। কিন্তু পারিনি। এখনও সমালোচনা করলে পোস্টের নিচে আমাকে ও আমার পরিবারকে নিয়ে অকথ্য ভাষায় গালাগাল করা হয়। এজন্যই স্ট্যাটাসটি দেওয়া।’
এদিকে সাম্প্রতিক সময়ে আরও একটি বিষয় লক্ষণীয়। সেটি হলো বর্তমান সরকার কিংবা সমন্বয়কদের আরও কিছুদিন সময় দেয়ার পর সমালোচনার অনুরোধ করার যুক্তি তুলে ধরে অনেকে। এ প্রসঙ্গে টয়ার জবাব বেশ স্পষ্ট। তার ভাষায়, ‘সমস্যার কথা শুরুতেই বলতে হবে। কারণ, ভুল শোধরানোর এখনই সময়। তাই প্রথম দিন থেকেই বলার মানসিকতা থাকতে হবে। অনেকেই বলছেন, আপনারা ১০ দিন, ১৫ দিনও সময় দিচ্ছেন না, অথচ ১৫ বছর ধরে ওদের (আওয়ামী লীগ) সহ্য করছেন, দালালি করেছেন! ওদের পক্ষে ছিলেন। আমার কথা হলো, এটা আসলে ১০ কিংবা ১৫ দিনের ব্যাপার নয়, আমাদের মধ্যে যে হিংসাত্মক মনোভাব এখনও আছে, ওটাকে কীভাবে নিয়ন্ত্রণে আনতে পারি, সেটা নিয়ে ভাবা উচিত। আমার কথা হচ্ছে, আমি যা লিখছি, সেটা তোমাদের কাজের মাধ্যমে ভুল প্রমাণের চেষ্টা করো। উল্টো গালি দিতে পারো না, দালাল বলতে পারো না। যেটা তোমরা করে যাচ্ছ নিয়মিত।’
মুমতাহিনা টয়া, সাম্প্রতিক সময়ে টিভি নাটকের কাজ কমিয়ে চেষ্টা করছেন সিনেমা ও ওটিটিতে নিজেকে মেলে ধরার। দেশের পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে জানাবেন বেশ ক’টি কাজের খবর।