এবার নোয়াখালী ও লক্ষ্মীপুরে গতকাল মঙ্গলবার রাত থেকে টানা বৃষ্টির কারণে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। এদিকে ফেনীতে বন্যার পানি সরে যাওয়ায় স্পষ্ট হচ্ছে ক্ষয়ক্ষতি। এ ছাড়া বিভিন্ন দুর্গত এলাকায় দেখা দিয়েছে খাদ্য ও সুপেয় পানির সংকট।
গতকাল রাত থেকে আজ বুধবার ( ২৮ আগাস্ট) সকাল পর্যন্ত টানা বৃষ্টির কারণে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে নোয়াখালীতে। জেলার আট উপজেলায় এখনও ২০ লাখ মানুষ পানিবন্দি। স্বেচ্ছাসেবীরা বলছেন, নৌযান সংকটে ব্যাহত হচ্ছে উদ্ধার ও ত্রাণ কার্যক্রম। জেলায় এ পর্যন্ত পানিতে ডুবে এবং বিদ্যুর্স্পশে আট জনের মৃত্যু হয়েছে।চাঁদপুরেও রাতভর বৃষ্টিতে বন্যা পরিস্থিতির কোনো উন্নতি হয়নি। শাহরাস্তি ও হাজীগঞ্জে বন্যার অবনিত হয়েছে। তবে ফরিদগঞ্জে পানি কমায় পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে। জেলার তিন উপজেলায় পানিবন্দি দেড় লাখ মানুষ।
এদিকে রাত থেকে আজ সকাল পর্যন্ত বৃষ্টিতে লক্ষ্মীপুরে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। পাঁচটি উপজেলায় বন্যাদুর্গত আট লাখ মানুষ।
কুমিল্লায় ঘরবাড়ি ছেড়ে অনেকেই উঠেছেন আশ্রয়কেন্দ্রে। পানির নিচে তলিয়ে আছে ৬০ হাজার হেক্টর ফসলি জমি। তবে ফেনীর বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। কিছু এলাকায় এখনও জলাবদ্ধতা রয়েছে। এ ছাড়া মৌলভীবাজারের কুলাউড়া, কমলগঞ্জ বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। তবে অপরিবর্তিত রয়েছে হাওরাঞ্চলে।
চাঁদপুরে ৬ উপজেলার বন্যা পরিস্থিতির এখনো উন্নতি হয়নি। উল্টো বানের পানিতে নতুন করে সদর ও কচুয়া উপজেলার বেশ কিছু এলাকার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। বাড়িঘর ছেড়ে বিভিন্ন আশ্রয় কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছে হাজারো পরিবার।
কুমিল্লায় গোমতি নদীর পানি কমেছে। তবে, বুড়িচং ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলা অংশে ভাঙ্গা বাধ দিয়ে এখনো পানি ঢুকছে। এতে প্লাবিত হচ্ছে নতুন নতুন এলাকা। লাঙ্গলকোট, লাকসাম, মনোহরগঞ্জ, চৌদ্দগ্রাম, বরুড়া সহ বেশ কয়েকটি উপজেলায় বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়েছে।
ফেনীতে বন্যার পানি নামতে শুরু করেছে । আশ্রয়কেন্দ্র থেকে মানুষ বাড়ী ঘরে যেতে শুরু করেছে। সেখানেও যেন নতুন ভোগান্তি। সবকিছুই এখন ধ্বংসস্তুপ। সবকিছু হারিয়ে অনেকের চোখে হতাশার দৃশ্য। ধীরে ধীরে উন্নতি হচ্ছে চট্টগ্রামের বিভিন্ন উপজেলার বন্যা পরিস্থিতির। বৃষ্টি না হওয়ায় জেলার মিরসরাই, ফটিকছড়ি, হাটহাজারী, রাউজানের অধিকাংশ এলাকা থেকে পানি কমতে শুরু করেছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আশ্রয় নেয়া মানুষ ঘরে ফিরে যাচ্ছে।
মৌলভীবাজারের বন্যা পরিস্থিতির অনেকটা উন্নতি হয়েছে। মনু ও ধলাইসহ সবকটি নদ নদীর পানি বিপদসীর নিচে নেমে গেছে। বন্যার পানি নেমে যাওয়ায় অনেকেই বাড়ি ফিরছেন। বাড়িঘর থেকে পানি নামলেও তৈরি হয়েছে অনেক ক্ষত। অন্যদিকে এই জেলার হাওরবেষ্টিত নিুাঞ্চলের পানি কমছে একটু ধীরে গতিতে। ফলে সেখানে এখনো পানিবন্দি আছে অনেক মানুষ।