1. [email protected] : নিউজ ডেস্কঃ : নিউজ ডেস্কঃ
  2. [email protected] : unikbd :
শনিবার, ৭ই ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
২২শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ,
৪ঠা জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি

যেসব সওয়াব এশার নামাজে

  • প্রকাশিতঃ বৃহস্পতিবার, ১০ অক্টোবর, ২০২৪
যদিও দিনের শেষ ফরজ নামাজ হলো এশার নামাজ। সময়ের বিবেচনায় শেষ নামাজ হলেও তা ফজিলতের দিক থেকে অনেক গুরুত্বপূর্ণ। হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আল্লাহর রাসুল (সা.) বলেছেন,  ‘মুনাফিকদের জন্য সবচেয়ে কষ্টকর নামাজ হলো এশা ও ফজরের নামাজ। তারা যদি এই নামাজের ফজিলত সম্পর্কে জানত, তা হলে অবশ্যই হামাগুড়ি দিয়ে হলেও তারা তাতে শরিক হতো’ (বুখারি, হাদিস : ৬১৫)। অন্যত্র বর্ণিত হয়েছে, ‘যে ব্যক্তি জামাতের সঙ্গে এশার নামাজ আদায় করল সে যেন অর্ধেক রাত পর্যন্ত নামাজ আদায় করল। আর যে ব্যক্তি ফজরের নামাজ জামাতের সঙ্গে আদায় করল সে যেন সারা রাত জেগে নামাজ আদায় করল।’ (মুসলিম, হাদিস : ১৩৭৭)
এশার নামাজ কতটা ফজিলতপূর্ণ, উপরোল্লিখিত হাদিস থেকে সুস্পষ্টভাবে প্রতীয়মান হচ্ছে। সামান্য সময়ের ইবাদত আল্লাহর কাছে কত অসামান্য হয়ে থাকে। তা ছাড়া এই নামাজ যদি জামাতের সঙ্গে আদায় করা হয়, এর ফজিলত আরও বহুগুণে বেড়ে যাবে। জামাতে নামাজ আদায়ের ফজিলত সম্পর্কে নবী (সা.) বলেছেন, ‘জামাতে নামাজের ফজিলত একাকী নামাজের চেয়ে ২৭ গুণ বেশি।’ (মুসলিম, হাদিস : ১৪৭৭)
মাগরিবের ওয়াক্ত শেষ হলেই এশার ওয়াক্ত শুরু হয়। মধ্য রাত পর্যন্ত এর সময় বাকি থাকে। কেউ এর মধ্যে পড়তে না পারলে সুবহে সাদিক পর্যন্ত পড়তে পারবে। রাতের এক প্রহর চলে যাওয়ার পরই এশার নামাজ পড়া উত্তম। এশার নামাজে চার রাকাত ফরজ, দুই রাকাত সুন্নত। চার রাকাত ফরজের আগে চার রাকাত সুন্নত পড়া উত্তম। এ হিসেবে এশার নামাজ মোট দশ রাকাত। এশার পর তিন রাকাত বিতর পড়া ওয়াজিব। বিতর এশার নামাজের অন্তর্ভুক্ত নয়, স্বতন্ত্র নামাজ, যা এশার পর এবং ফজরের আগে পড়তে হয়। শেষ রাতে তাহাজ্জুদে উঠতে না পারলে এশার নামাজের পরপরই তা পড়ে নেওয়া যায়। বিতরসহ হিসাব করলে মোট তের রাকাত হয়। তবে এশার আগের চার রাকাত সুন্নত সবসময় পড়তে না পারলে চার রাকাত ফরজ, দুই রাকাত সুন্নত ও তিন রাকাত বিতর- মোট ৯ রাকাত প্রতিদিন গুরুত্বের সঙ্গে আদায় করা কর্তব্য।
এশার ফরজ নামাজের পর দুই রাকাত সুন্নতের বিশেষ ফজিলত রয়েছে। এটা বাদ দেওয়া উচত নয়। কিছু মানুষ মনে করেন চার রাকাত ফরজ ও তিন রাকাত বিতরের ওয়াজিব আদায় করলেই হবে। সুন্নত বাদ দিলেও হয়। এটা শয়তানের কুমন্ত্রণা ছাড়া কিছুই নয়। নিয়মিত কোনো সুন্নত বাদ দিলেও গুনাহ হবে।
এশার পরের দুই রাকাত সুন্নতের ফজিলত সম্পর্কে হজরত আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত হয়েছে, আল্লাহর রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি দৈনিক ১২ রাকাত সুন্নতে মুয়াক্কাদা নিয়মিত আদায় করবে তার জন্য আল্লাহ জান্নাতে একটি ঘর নির্মাণ করবেন। ১২ রাকাত সুন্নতে মুয়াক্কাদা হলো জোহরের আগে চার রাকাত, পরে দুই রাকাত, মাগরিবের পরে দুই রাকাত, এশার পরে দুই রাকাত এবং ফজরের আগে দুই রাকাত।’ (তিরমিজি, হাদিস : ৪১৪)
মুমিন কখনো নেক কাজে ক্লান্তিবোধ করে না। সদা একনিষ্ঠভাবে আল্লাহর ইবাদতে মগ্ন থাকে। যথাসময়ে নামাজ আদায় করে। তাই আল্লাহ এর বিনিময়ে তার উভয় জীবন প্রশান্তিময় করে দেন। পবিত্র কুরআনে বর্ণিত হয়েছে, ‘মুমিনরা নামাজ আদায় করে, জাকাত আদায় করে এবং আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের আনুগত্য করে। তারা এমন লোক, যাদের প্রতি আল্লাহ রহমত বর্ষণ করেন’ (সুরা তাওবা, আয়াত : ৭১)। অন্যত্র আল্লাহ নামাজের উপকার সম্পর্কে বলেন, ‘আপনি নামাজ আদায় করুন দিনের দুই প্রান্তে ও রাতের কিছু অংশে। নিঃসন্দেহে সৎকাজগুলো অসৎকাজগুলোকে মিটিয়ে দেয়’ (সুরা হুদ, আয়াত : ১১৪)। তা ছাড়া যারা নামাজের ব্যাপারে উদাসীন তাদের ব্যাপারে আল্লাহ শাস্তির ঘোষণা দিয়েছেন। আল্লাহ বলেন, ‘দুর্ভোগ সেসব নামাজির জন্য, যারা নিজেদের নামাজের ব্যাপারে গাফেল।’ (সুরা মাউন, আয়াত : ৪-৫)।
বর্তমানে অনেক মানুষ পার্থিব ভোগ-সামগ্রীতে এতটাই মত্ত যে, পরকালের অনন্ত জীবনের কথা ভুলেই গেছে যেন! ভুলে গেছে জান্নাতের অফুরান নেয়ামত ও জাহান্নামের কঠিন শাস্তির কথা। অথচ আল্লাহ এই পার্থিব জীবনকে ধোঁকা বলে আখ্যায়িত করেছেন। আল্লাহ বলেন, ‘প্রত্যেক প্রাণীকেই মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করতে হবে এবং তোমাদের সবাইকে তোমাদের কর্মের পুরোপুরি প্রতিদান কেবল কেয়ামতের দিনই দেওয়া হবে। অতঃপর যাকেই জাহান্নাম থেকে দূরে সরিয়ে দেওয়া হবে ও জান্নাতে প্রবেশ করিয়ে দেওয়া হবে, সে-ই প্রকৃত অর্থে সফলকাম হবে।
আর এই পার্থিব জীবন তো প্রতারণার উপকরণ ছাড়া কিছুই না (সুরা আলে ইমরান, আয়াত : ১৮৫)। পরকালকে ভুলে যাওয়াই বর্তমানে বহু অশান্তির কারণ। যথাযথভাবে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের মাধ্যমে আবার আমাদের ব্যক্তি ও সামাজিক জীবনে আসতে পারে অফুরান কল্যাণ। কেননা আল্লাহ বলেন, ‘নিশ্চয় নামাজ অশ্লীল ও মন্দ কাজ থেকে বিরত রাখে’ (সুরা আনকাবুত, আয়াত : ৪৫)। আল্লাহ আমাদের নিয়মিত পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করার তওফিক দান করুন।

শেয়ারঃ

এই জাতীয় অন্যান্য সংবাদ
© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত © ২০২৪
Developed By UNIK BD