বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, জল্লাদের মনোবৃত্তি নিয়ে দেশ শাসন করেছেন সাবেক স্বৈরাচারী প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগ। তাই ওইসব আওয়ামী ফেরাউনদের বাংলাদেশে আর জায়গা হবেনা। এছাড়াও আওয়ামী লীগের সৃষ্টি করা বাজার সিন্ডিকেট ভেঙ্গে দিয়ে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে আনতে না পারলে শহীদ ছাত্রদেরর রক্ত বৃথা জাবে। বলেন।
রুহুল কবির রিজভী আরও বলেন, শিগগিরি ছোট ছোট শিক্ষার্থী হত্যার দায়ে স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা ও তার দোসরদের বিচারের আওতায় আনা হবে। কারণ আওয়ামী লীগের ফেরাউন বাহিনী এদেশে বিভিন্ন খাতে ভর্তুকির নামে লুটপাট ও ধ্বংসযজ্ঞসহ নানা সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালালেও শেখ হাসিনা কখনোই তাদের বিচারের আওতায় আনেননি। শেখ হাসিনা নিজেকে ক্ষমতায় স্থায়ী করার জন্য এমন কোন পথ নেই যা অবলম্বন করেননি। এক্ষেত্রে পুলিশ বাহিনী, র্যাব ও সকল আইন প্রয়োগকারী সংস্থাসহ কারগারকেও তিনি অপব্যবহার করেছেন ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য। এমনকি আওয়ামী লীগের অনাচার ও নানা অন্যায়ের বিরুদ্ধে ফেসবুকে ইউটিউবার ও ব্লাগাররা কথা বললে তাদেরকেও কারাগারে নিক্ষেপ করতেন শেখ হাসিনা।
বাজারে দ্রব্যমূল্যের নিয়ন্ত্রণে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের আমলে সৃষ্টি হওয়া বাজার সিন্ডিকেট যদি আমরা ভাঙতে না পারি তাহলে গণতন্ত্র ও ছাত্র আন্দোলনের যে চেতনা তা ভুলুন্ডিত হবে। এদেশের সাধারণ মানুষ যদি মোটা চাল, তেল ও সবজি ক্রয় সীমার মধ্যে কিনে না খেতে পারে তাহলে ছাত্র—জনতা যে রক্ত দিয়েছে তা বৃথা হয়ে যাবে। আর বাংলাদেশে শেখ হাসিনার সাজানো নির্বাচন ও ভোট চুরির কারণে আওয়ামী লীগের প্রতি মানুষের আস্থা উঠে গেছে। কারণ ওই আমলে মানুষের ভোটাধিকার ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছে। নির্বাচনের সময় মাঠে ভোটের সকালে যে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী দেখা গেছে, বিকালেও একই লোকদের দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে। তাই মানুষের মাঝে গণতন্ত্র ও অধিকার প্রতিষ্ঠিত করতে বাংলাদেশে একটি নির্বাচিত সরকার ব্যবস্থা বর্তমানে খুবই জরুরী।
এ সময় বর্তমান সরকারে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্নদ ইউনুসের উদ্দেশ্য রিজভী বলেন, আপনি একটি অবাধ ও সুষ্ঠু জাতীয় নির্বাচনের রোডম্যাপ না দিয়ে কালক্ষেপন করছেন যা মোটেও ঠিক হচ্ছে না। সংস্কার শেষে কতদিনের মধ্যে আপনারা নির্বাচন দিবেন তা জনগনের স্পষ্ট করতে হবে। আর যে নির্বাচন গত ১৫ বছরে কেউ দিতে পারেনি সেই অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হলে জনগনই ঠিক করবে কোন দল বা কাকে তারা নির্বাচিত করবে। এতে করে জনগনের আশা—আকাঙ্খা পূরণ হয়ে মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠা হবে।
রিজভী বলেন, আমরা “বিএনপি পরিবার” সংগঠনটি স্বয়ং তারেক রহমান নামটি দিয়েছেন। তাই সারা বাংলাদেশে দেশনায়ক তারেক রহমানের নেতৃত্বে আমরা শহীদ ছাত্রদের পরিবারের পাশে দাঁড়াতে চাই,যেভাবে তারেক রহমান সাধারণ মানুষের পাশে থেকে আজীবন সেবা করেছেন। আর তারেক রহমানের বিকল্প এদেশে আর হবেনা। আর বাংলাদেশের মানুষ এখন বুঝে গেছে বাংলাদেশের হাল ধরতে তারেক রহমানই যথেষ্ট।
বিএনপি পরিবারের আহবায়ক আতিকুর রহমান রুমনের সভাপতিত্বে ও সদস্যসচীব কৃষিবিদ মিথুনের সঞ্চালনায় এ সময় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সদস্য সচীব তানভীর আহমেদ রবিন। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সহ—সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যাপক আমিনুল ইসলাম, তথ্য ও সম্প্রচার বিষয়ক সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার আশরাফ হোসেন বকুল, স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রিয় নির্বাহী কমিটির সহ—সভপতি মো. জাহিদুল কবির, সদস্য মাসুদ রানা লিটন,ফরহাদ আলী সজীব, শাহাদত হোসেন, অধ্যাপক আমিনুল ইসলাম, মো. জাকির হোসেন জিকু ও বৃহত্তর সারুলিয়া ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. হযরত আলী সহ ঢাকা—৫ আসনের ডেমরা—যাত্রাবাড়ী থানা বিএনপি ও অংগ গঠনের নেতৃবৃন্দরা উপস্থিত ছিলেন।
এদিন রুহুল কবির রিজভী বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত ডেমরা—যাত্রাবাড়ী থানা এলাকার শহীদ মেহেদি হাসান, শাহাদাত হোসেন শাওন, আক্কাস আলী, মো. জনি, মুজিবুর রহমান ওমর, মিরাজ হোসেন ও বাবুল মৃধার পরিবারকে গভীর সমবেদনা ও আর্থিক সহায়তা প্রদান করেন। পাশাপাশি আহত একজন ছাত্রকেও আর্থিক সহায়তা প্রদান করেন।