যদিও দুপুর গড়িয়ে বিকেল হতেই হাড়ে কাঁপন ধরাচ্ছে উত্তরের বাতাস, যার রেশ থাকছে পরদিন সকাল পর্যন্ত। অঞ্চলভেদে হালকা থেকে ঘন কুয়াশা থাকছে মধ্যরাত থেকে সকাল পর্যন্ত। কোনো কোনো অঞ্চলে দুপুরেও থাকছে কুয়াশা। দিনের কিছু সময় বাদ দিলে সে অর্থে সূর্যের দেখা মিলছে না।
রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে দুই-তিন দিন ধরে শীতের এই চিত্র দেখা যাচ্ছে। হিমেল বাতাস আর কুয়াশায় জনজীবনে বাড়ছে ভোগান্তি। শীতের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়তে শুরু করেছে ঠাণ্ডাজনিত রোগীর সংখ্যা।
বৃহস্পতিবার (১২ ডিসেম্বর) রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে শীতের অনুভূতি অনেকটাই বেড়েছে আগের দুই-তিন দিনের তুলনায়।
কাগজে-কলমে শৈত্যপ্রবাহ না থাকলেও কনকনে ঠাণ্ডার অনুভূতি মনে করিয়ে দিয়েছে শৈত্যপ্রবাহের কথা। আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, এমন পরিস্থিতি থাকতে আগামী রবিবার পর্যন্ত।এ বিষয়ে আবহাওয়া অধিদপ্তরের সহকারী আবহাওয়াবিদ আফরোজা সুলতানা বলেন, ‘এ সময় দেশে উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে আসা ঠাণ্ডা বাতাস প্রবাহিত হয়। বৃহস্পতিবার কুয়াশা থাকার কারণে সূর্যের আলো সেভাবে প্রবেশ করতে পারেনি।ফলে দিনের তাপমাত্রা কমে শীতের অনুভূতি বেড়েছে। তবে এটাকে শৈত্যপ্রবাহ বলা যাবে না। আগামী দুই-তিন দিনও এই পরিস্থিতি থাকতে পারে।’ আবহাওয়া অধিদপ্তরের হিসাবে তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রি বা এর নিচে নামলে তা শৈত্যপ্রবাহ হিসেবে বিবেচিত হয়। তবে বৃহস্পতিবার দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল গোপালগঞ্জ ও চুয়াডাঙ্গায়, ১০.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
এ ছাড়া ভোলায় ১০.৫ ডিগ্রি, বরিশালে ১১.২ ডিগ্রি ও মাদারীপুরে ১১.৩ ডিগ্রি ছিল সর্বনিম্ন তাপমাত্রা। ঢাকায় এ সময় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ১৪.৮ ডিগ্রি।শৈত্যপ্রবাহ না থাকলেও শৈত্যপ্রবাহের মতো অনুভূতি কেন হচ্ছে জানতে চাইলে আফরোজা সুলতানা বলেন, প্রকৃত তাপমাত্রার চেয়ে অনুভূত তাপমাত্রা আসলে কম। অর্থাৎ তাপমাত্রা অনুযায়ী যে শীত অনুভূত হওয়ার কথা তার চেয়ে বেশি অনুভূত হচ্ছে। এর মূল কারণ কুয়াশার কারণে সূর্যের আলো না আসতে পারা। সেই সঙ্গে উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে আসা ঠাণ্ডা বাতাস তো রয়েছেই।আফরোজা সুলতানা জানান, সামনে কুয়াশাভাব কেটে গেলে তাপমাত্রা আরো কিছুটা কমতে পারে। কিন্তু তখন আবার সূর্যের আলোর প্রাপ্যতাও বাড়বে। ফলে দিনের বেলায় শীতের অনুভূতি কমবে। ১৫ ডিসেম্বরের পর দেশের উত্তর, উত্তর-পূর্ব ও উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের কোনো কোনো এলাকার ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে।
এদিকে আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ সারা দেশের আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে শুক্রবার। সারা দেশে রাত ও দিনের তাপমাত্র সামান্য কমতে পারে। তাপমাত্রা কমার এই প্রবণতা থাকতে পারে আগামী রবিবার পর্যন্ত।
শুক্রবার দুপুর পর্যন্ত দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা পড়তে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস। মধ্যরাত থেকে আগামী শনিবার সকাল পর্যন্ত দেশের উত্তর, উত্তর-পূর্বাংশের কোথাও কোথাও মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা এবং অন্যান্য অঞ্চলে হালকা থেকে মাঝারি ধরনের কুয়াশা পড়তে পারে।