1. [email protected] : নিউজ ডেস্কঃ : নিউজ ডেস্কঃ
  2. [email protected] : unikbd :
মঙ্গলবার, ৮ই জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
২৪শে আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ,
১২ই মহর্‌রম, ১৪৪৭ হিজরি

শবেবরাতের গুরুত্বপূর্ণ ৪ আমল

  • প্রকাশিতঃ শুক্রবার, ১৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫

 

 যদিও শবেবরাত শব্দ দুটি হাদিসে নেই। হাদিসের ভাষায় এ রাতকে ‘লাইলাতুন নিসফি মিন শাবান’ তথা ১৫ শাবানের রাত বলা হয়। ‘শবেবরাত’ ফারসি শব্দ। ‘শব’ শব্দের অর্থ রাত, ‘বরাত’ অর্থ নাজাত বা মুক্তি।
এই দুই শব্দ মিলে অর্থ হয় মুক্তির রজনী।এ রাতের ফজিলত সম্পর্কে কোরআন মাজিদে সরাসরি নির্দেশনা না থাকলেও হাদিস শরিফে নির্ভরযোগ্য সনদ বা বর্ণনাসূত্রে একাধিক হাদিস বর্ণিত হয়েছে। বিখ্যাত সাহাবি মুয়াজ বিন জাবাল (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী (সা.) ইরশাদ করেছেন, আল্লাহ তাআলা অর্ধ শাবানের রাতে, অর্থাৎ শাবানের ১৪ তারিখ দিবাগত রাতে তাঁর সৃষ্টির দিকে রহমতের দৃষ্টি দেন এবং মুশরিক ও বিদ্বেষ পোষণকারী ছাড়া সবাইকে ক্ষমা করে দেন। (ইবনে হিব্বান, হাদিস : ৫৬৬৫)

হাদিস বিশারদদের ভাষ্য মতে, হাদিসটির মান সহিহ তথা বিশুদ্ধ।

এ জন্যই ইমাম ইবনে হিব্বান (রহ.) তার প্রসিদ্ধ হাদিসে রচিত কিতাব ‘কিতাবুস সহিহ’-এ হাদিসটি উল্লেখ করেছেন।ফজিলতপূর্ণ এই রাতের আমলের ব্যাপারে হাদিসের যেসব নির্দেশনা-ইঙ্গিত পাওয়া যায় তা সবই ব্যক্তিগত নফল ইবাদত। তাই আমাদের উচিত মনগড়া ইবাদত-আমল পরিহার করে যথাসম্ভব রাত্রি জাগরণের মাধ্যমে বেশি বেশি নফল নামাজ, কোরআন তিলাওয়াত, তাওবা-ইস্তিগফার ও জিকির-আজকারে মশগুল থাকা।

১. নফল নামাজ পড়া

বেশি বেশি নফল নামাজ ও দীর্ঘ ইবাদত প্রসঙ্গে আম্মাজান আয়েশা (রা.) থেকে একটি হাদিস বর্ণিত হয়েছে, তিনি বলেন, একবার রাসুলুল্লাহ (সা.) রাতে নামাজে দাঁড়ান এবং এত দীর্ঘ সিজদা করেন যে আমার ধারণা হলো তিনি হয়তো মৃত্যুবরণ করেছেন।

আমি তখন উঠে তার বৃদ্ধাঙ্গুলি নাড়া দিলাম। তার বৃদ্ধাঙ্গুলি নড়ল। যখন তিনি সিজদা থেকে উঠলেন এবং নামাজ শেষ করলেন তখন আমাকে লক্ষ্য করে বললেন, হে আয়েশা, তোমার কি এই আশঙ্কা হয়েছে যে আল্লাহর রাসুল তোমার হক নষ্ট করবেন? আমি জবাবে বললাম, না, হে আল্লাহর রাসুল, আপনার দীর্ঘ সিজদা থেকে আমার এই আশঙ্কা হয়েছিল, আপনি মৃত্যুবরণ করেছেন! নবীজি জিজ্ঞেস করলেন, তুমি কি জানো এটা কোন রাত? আমি বললাম, আল্লাহ ও তাঁর রাসুল ভালো জানেন।রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করলেন, ‘এটা হলো অর্ধ শাবানের রাত (শাবানের ১৪ তারিখের দিবাগত রাত)। আল্লাহ তাআলা অর্ধ শাবানের রাতে তাঁর বান্দার প্রতি মনোযোগ দেন এবং ক্ষমাপ্রার্থনাকারীদের ক্ষমা করেন এবং অনুগ্রহ প্রার্থীদের অনুগ্রহ করেন আর বিদ্বেষ পোষণকারীদের ছেড়ে দেন তাদের অবস্থায়।

’ (শুআবুল ঈমান, হাদিস : ৩৫৫৪)এই হাদিস দ্বারা প্রমাণিত হয় যে নফল নামাজে দীর্ঘ কিরাত পড়া এবং লম্বা সিজদা করা এ রাতের বিশেষ একটি আমল।

২. তাওবা-ইস্তিগফার

এই রাতের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ আমল হচ্ছে বেশি বেশি তাওবা-ইস্তিগফার করা। কারণ বরকতময় এই রাতে আল্লাহ তাআলা প্রথম আকাশে নেমে বান্দাদের প্রতি রহমতের দৃষ্টি দেন। তাদের গুনাহ মাফ করেন। এই মর্মে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, যখন অর্ধ শাবানের রাত আগমন করে তখন আল্লাহ তাআলা প্রথম আকাশে অবস্থান করেন এবং মুশরিক ও বিদ্বেষপোষণকারী ছাড়া অন্যদের ক্ষমা করে দেন। (মুসনাদে বাজজার, হাদিস : ৮০)

তাই সংকটময় পরিস্থিতিতে এই রাতে আমাদের আল্লাহর দিকে মনোযোগী হওয়া, আল্লাহর কাছে বেশি বেশি ক্ষমা প্রার্থনা করা এবং করোনাভাইরাস থেকে হেফাজতের দোয়া করা উচিত।

৩. কোরআন তিলাওয়াত

নফল নামাজ, দোয়া ও ইস্তিগফারের পাশাপাশি এই রাতে আমরা কোরআন তিলাওয়াতের আমলটি গুরুত্বের সঙ্গে করতে পারি। সাহাবি আনাস বিন মালিক (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেছেন, পৃথিবীতে আল্লাহ তাআলার কিছু পরিবারবর্গ আছে। উপস্থিত সাহাবায়ে কেরাম জিজ্ঞাসা করলেন, হে আল্লাহর রাসুল, তারা কারা? জবাবে তিনি বলেন, যারা কোরআন বেশি বেশি তিলাওয়াত করে তারা হচ্ছে পৃথিবীতে আল্লাহ তাআলার পরিবারবর্গ। (ইবনে মাজাহ, হাদিস : ২১৫)

৪. পরের দিন রোজা রাখা

এ প্রসঙ্গে আলী (রা.) থেকে একটি হাদিস বর্ণিত হয়েছে, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ১৫ শাবানের রাত (১৪ তারিখ দিবাগত রাত) যখন আসে তখন তোমরা এ রাতটি ইবাদত-বন্দেগিতে কাটাও এবং দিনের বেলা রোজা রাখো। (ইবনে মাজাহ, হাদিস : ১৩৮৮)

এই বর্ণনাটির সনদ দুর্বল হলেও তা গ্রহণযোগ্য। হাদিস বিশারদদের মতে, ফজিলতপূর্ণ বিষয়ে জয়িফ হাদিস আমলযোগ্য। তা ছাড়া শাবান মাসে বেশি বেশি নফল রোজা রাখার কথা সহিহ হাদিসে এসেছে এবং আইয়ামে বীজ অর্থাৎ প্রতি চন্দ্র মাসের ১৩, ১৪ ও ১৫ তারিখে রোজা রাখার বিষয়টিও সহিহ হাদিস দ্বারা প্রমাণিত।

তাই আসুন, বিশুদ্ধ আমলের মাধ্যমে এ রাতের ফজিলত, বরকত ও মাগফিরাত অর্জনে সচেষ্ট হই। সব ধরনের বিদআত বর্জন করি।

আল্লাহ তাআলা আমাদের এ রাতে সব ধরনের কল্যাণ দান করুন। আমিন।

 

শেয়ারঃ

এই জাতীয় অন্যান্য সংবাদ
© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত © ২০২৪
Developed By UNIK BD