যদিও ক্ষণস্থায়ী পৃথিবী মুমিনের জন্য পরীক্ষার হলের মতো। পরকালে সফল হতে অবশ্যই এই পরীক্ষায় সফলকাম হতে হবে। এরপরই মিলবে কাঙ্ক্ষিত জান্নাত। পবিত্র কুরআনে মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেছেন, ‘জমিনের ওপর যা কিছু আছে আমি সেগুলোর শোভাবর্ধন করেছি, যাতে আমি মানুষকে পরীক্ষা করতে পারি যে, আমলের ক্ষেত্রে কারা উত্তম।’ (সুরা কাহাফ, আয়াত: ৭)
এজন্য গুনাহ বা পাপ কাজ থেকে নিজেকে রক্ষার পাশাপাশি আল্লাহর হুকুম ও রাসুল (সা.) এর আদর্শ এবং তাঁর দেখানো পথ অনুসরণ জরুরি। এ ক্ষেত্রে বিভিন্ন সময়ে বর্ণিত হাদিসে পরকালে সফল হতে উত্তম আমল করার পাশাপাশি নেক আমল ধ্বংস করার মতো কাজ থেকে বিরত থাকার কথা এসেছে।
এ ক্ষেত্রে শিরক আমল ধ্বংসকারী কাজের অন্তর্ভুক্ত। এর চেয়ে বড় কবীরা গুনাহ নেই। হাদিসে এসেছে, আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেছেন- কবীরা গুনাহগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বড় গুনাহ হচ্ছে আল্লাহর সঙ্গে শরিক (শিরক) করা, প্রাণ সংহার করা, পিতা-মাতার অবাধ্য-হওয়া আর মিথ্যা বলা অথবা মিথ্যা সাক্ষ্য দেয়া। (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৬৪০৫)
অন্যদিকে শিরকের কারণে উত্তম আমল যে নিষ্ফল হবে, সেই ঘোষণা খোদ মহান রব পবিত্র কুরআনে দিয়েছেন। ইরশাদ হয়েছে, ‘আর অবশ্যই তোমার কাছে এবং তোমার পূর্ববর্তীদের কাছে ওহী পাঠানো হয়েছে যে, তুমি শিরক করলে তোমার কর্ম নিষ্ফল হবেই। আর অবশ্যই তুমি ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত হবে। (সুরা জুমা, আয়াত: ৬৫)
এ ক্ষেত্রে মনে রাখতে হবে, শিরকে লিপ্ত থাকা অবস্থায়ও মহান আল্লাহর দরবারে কোনো আমল কবুল হয় না। বাহয ইবনে হাকীম (রা.) থেকে তার পিতা ও তার দাদার সূত্রে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেছেন, কোনো ব্যক্তি ইসলাম গ্রহণ করার পর মুশরিক হয়ে শিরকে লিপ্ত হলে আল্লাহ তার কোনো আমলই গ্রহণ করেন না, যতক্ষণ পর্যন্ত না সে মুশরিকদের থেকে পৃথক হয়ে মুসলিমদের মধ্যে প্রত্যাবর্তন করে। (ইবনু মাজাহ, হাদিস: ২৫৩৬)
অন্যদিকে মানুষকে আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ করার কারণেও নেক আমল ধ্বংস হয়ে যায়। জুনদুব (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে এসেছে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন- এক ব্যক্তি বলল, আল্লাহর কসম! আল্লাহ অমুক ব্যক্তিকে ক্ষমা করবেন না। আর আল্লাহ তা’আলা ইরশাদ করেন, সে ব্যক্তি কে, যে কসম খেয়ে বলে যে- আমি অমুককে ক্ষমা করবো না? আমি তাকে (যে ব্যক্তির বিষয়ে কসম করে বলা হয়েছে) ক্ষমা করে দিলাম এবং তার (যে ব্যক্তি ক্ষমা না করার কথা বললো) আমল বরবাদ করে দিলাম, অথবা সে যেমনটা বলেছে। (সহিহ মুসলিম, হাদিস: ৬৪৪২)