1. [email protected] : নিউজ ডেস্কঃ : নিউজ ডেস্কঃ
  2. [email protected] : unikbd :
সোমবার, ৩০শে জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
১৬ই আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ,
৪ঠা মহর্‌রম, ১৪৪৭ হিজরি

সৌদি আরবে ৫০ আফ্রিকান বন্দির শিরশ্ছেদের আশঙ্কা, আন্তর্জাতিক মহলে উদ্বেগ

  • প্রকাশিতঃ সোমবার, ৩০ জুন, ২০২৫
এবার সৌদি আরবের নাজরান কারাগারে বন্দি অন্তত ৫০ জন ইথিওপিয়ান ও সোমালিয়ান নাগরিক যে কোনো সময় মৃত্যুদণ্ডের শিকার হতে পারেন বলে সতর্ক করেছে মানবাধিকার সংস্থাগুলো। মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম মিডল ইস্ট আই (MEE)-কে দেওয়া তথ্যে বন্দিদের পরিবার বলছে, তাদের ‘বিদায় বলার জন্য’ বলা হয়েছে, যা শিরশ্ছেদ কার্যকরের পূর্বাভাস বলে মনে করা হচ্ছে।

প্রতিবেদনে উল্লেখ, এই বন্দিরা মাদক পাচারের অভিযোগে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত, তবে অনেকেই অভিযোগ করছেন, বিচার প্রক্রিয়া ছিল ত্রুটিপূর্ণ। তাদের অনেকেই ঈদুল আযহার পর থেকে কারাগারে ধারাবাহিকভাবে শিরশ্ছেদের ঘটনা প্রত্যক্ষ করেছেন। MEE-র হাতে থাকা এক তালিকা অনুযায়ী, অন্তত ৪৩ জন ইথিওপিয়ান এবং ১৩ জন সোমালির নাম রয়েছে যাদের বিরুদ্ধে রায় কার্যকর হতে পারে।

অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালের জানুয়ারি থেকে এপ্রিলের মধ্যেই সৌদি আরব মাদক-সম্পর্কিত অপরাধে ৫২ জনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করেছে। অথচ ২০২১ সালে এই ধরনের মামলায় একটি অনানুষ্ঠানিক স্থগিতাদেশ ছিল।

বিশ্লেষকদের মতে, বর্তমানে সৌদি বিচারব্যবস্থা ‘হাশিশ’-এর মতো অপেক্ষাকৃত হালকা মাদকদ্রব্যেও মৃত্যুদণ্ড দিচ্ছে, যা পূর্বে নজিরবিহীন ছিল।

এক বন্দির পরিবার, ইথিওপিয়ার ওরোমিয়া অঞ্চলের বাসিন্দা খালিদ মোহাম্মদের মা জানান, “সে নির্দোষ। ২০১৬ সালে সরকারবিরোধী বিক্ষোভে অংশ নেয়ার পর দেশ ছাড়তে বাধ্য হয়েছিল। সৌদি পৌঁছানোর পরপরই তাকে আটক করা হয়, এবং ২০১৯ সালে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। এখনও সে নিজের ছেলের মুখও দেখতে পায়নি।”

ইউরোপিয়ান সৌদি অর্গানাইজেশন ফর হিউম্যান রাইটস-এর গবেষক দুআ ধাইনি বলেন, “অনেক বন্দির আইনজীবী ছিল না। অনুবাদ না বুঝে স্বাক্ষর করেছে, অনেককে জোর করে স্বীকারোক্তি দিতে বাধ্য করা হয়েছে।”

ইথিওপিয়া ও সোমালিয়ার সরকারি পদক্ষেপ নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। ইথিওপিয়ান দূতাবাস কার্যত নিষ্ক্রিয় থাকলেও, সোমালিয়া সরকার মৃত্যুদণ্ড বাতিলের অনুরোধ জানিয়েছে এবং বিষয়টি স্থানীয় গণমাধ্যমে ব্যাপকভাবে প্রচারিত হচ্ছে।

জাতিসংঘ ইতিমধ্যেই সৌদি আরবে তাবুক কারাগারে ২৬ জন মিশরীয় নাগরিকের সম্ভাব্য মৃত্যুদণ্ড নিয়ে উদ্বেগ জানিয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় ৩০টির বেশি মানবাধিকার সংস্থা সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানকে খোলা চিঠি দিয়ে শাস্তি স্থগিতের আহ্বান জানিয়েছে।

সৌদি আরব ২০৩৪ সালের ফুটবল বিশ্বকাপের আয়োজক দেশ হিসেবে নিজেদের ভাবমূর্তি পরিবর্তনের চেষ্টা করছে, কিন্তু প্রতিবছর শীর্ষ মৃত্যুদণ্ড কার্যকরকারী রাষ্ট্র হিসেবে আন্তর্জাতিক মহলে তাদের বিচারব্যবস্থার স্বচ্ছতা ও মানবাধিকারের প্রতি দায়বদ্ধতা নিয়ে গভীর উদ্বেগ রয়েছে।

২০২৩ সালে দেশটিতে ৩০০ জনেরও বেশি মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়েছে, যা বৈশ্বিকভাবে সর্বোচ্চ।

সূত্র: মিডল ইস্ট আই, অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল, জাতিসংঘ

শেয়ারঃ

এই জাতীয় অন্যান্য সংবাদ
© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত © ২০২৪
Developed By UNIK BD