1. newstatini@gmail.com : নিউজ ডেস্কঃ : নিউজ ডেস্কঃ
  2. admin@newstatini.com : unikbd :
সোমবার, ১৭ই নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
২রা অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ,
২৫শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি

যে পাঁচ অভিযোগে শেখ হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে রায় দেবেন ট্রাইব্যুনাল

  • প্রকাশিতঃ সোমবার, ১৭ নভেম্বর, ২০২৫

এবার বৈষম‍্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকে ঘিরে জুলাই-আগস্টে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় মোট পাঁচটি অভিযোগে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিষয়ে আজ (১৭ নভেম্বর) রায় ঘোষণা করবেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।

ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এ রায় ঘোষণা করবেন।

এ মামলায় তিন আসামির বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের সুনির্দিষ্টভাবে মোট পাঁচটি অভিযোগ আনে প্রসিকিউশন। আনুষ্ঠানিক অভিযোগ মোট আট হাজার ৭৪৭ পৃষ্ঠার। এর মধ্যে তথ্যসূত্র দুই হাজার ১৮ পৃষ্ঠার, জব্দ তালিকা ও দালিলিক প্রমাণাদি চার হাজার পাঁচ পৃষ্ঠার এবং শহীদদের তালিকার বিবরণ রয়েছে দুই হাজার ৭২৪ পৃষ্ঠার।

প্রসিকিউশনের আনা পাঁচটি অভিযোগ হলো—গণভবনের সংবাদ সম্মেলনে উসকানিমূলক বক্তব্য, হেলিকপ্টার থেকে প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহারের নির্দেশ, রংপুরে ছাত্র আবু সাঈদ হত্যা, চানখাঁরপুলে হত্যা ও  আশুলিয়ায় হত্যা ও লাশ পোড়ানো।

গণভবনের সংবাদ সম্মেলনে উসকানিমূলক বক্তব্য: ২০২৪ সালের ১৪ জুলাই গণভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে শেখ হাসিনা উসকানিমূলক বক্তব্য দেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে আসাদুজ্জামান খান কামাল, চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুনসহ তৎকালীন সরকারের অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের প্ররোচনা ও সহায়তায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এবং আওয়ামী সন্ত্রাসীরা নিরীহ ছাত্র-জনতার ওপর ব্যাপক মাত্রায় ও পদ্ধতিগতভাবে হামলা চালায়। এর মাধ্যমে হত্যা, হত্যার চেষ্টা, নির্যাতন করা হয়। এসব ঘটনায় আসামিদের প্ররোচনা, উসকানি, সহায়তা, সম্পৃক্ততা, অপরাধ সংঘটন প্রতিরোধে ব্যর্থতা, অপরাধ সংঘটনের জন্য দায়ী ব্যক্তিদের শাস্তি প্রদান না করা এবং ষড়যন্ত্র ছিল বলে অভিযোগ আনা হয়।

হেলিকপ্টার থেকে প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহারের নির্দেশ: শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি আন্দোলনকারীদের দমনে হেলিকপ্টার, ড্রোন থেকে প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহারের নির্দেশ দেন। আসাদুজ্জামান খান কামাল ও চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন এই নির্দেশ বাস্তবায়নে তাদের অধীন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে নির্দেশনা দেন। এর মাধ্যমে আসামিরা অপরাধ সংঘটনের নির্দেশ প্রদান, সহায়তা, সম্পৃক্ততা এবং ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটন করেছেন।

রংপুরে ছাত্র আবু সাঈদ হত্যা: ২০২৪ সালের ১৬ জুলাই রংপুরে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে ছাত্র আবু সাঈদকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় শেখ হাসিনা, আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, এই হত্যাকাণ্ডে তাদের নির্দেশ, প্ররোচনা, উসকানি, সহায়তা, সম্পৃক্ততা এবং ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত হয়েছে।

রাজধানীর চাঁনখারপুলে হত্যা: আন্দোলনকে ঘিরে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট ঢাকার চাঁনখারপুল এলাকায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গুলিতে ছয়জন ছাত্র নিহত হন। এই ঘটনাতেও শেখ হাসিনাসহ তিন জনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে।

আশুলিয়ায় হত্যা ও লাশ পোড়ানো: ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট আশুলিয়ায় ছয়জনকে গুলি করে হত্যা এবং তাদের মধ্যে পাঁচজনের লাশ পুড়িয়ে দেওয়া এবং একইসঙ্গে গুরুতর আহত একজনকে পুড়িয়ে দেওয়ার ঘটনায় তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে। এই ঘটনায় তিন আসামি কর্তৃক হত্যার নির্দেশ, প্ররোচনা, উসকানি, সহায়তা, সম্পৃক্ততা, ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত হয়েছে বলে অভিযোগ আনা হয়েছে।

মামলার অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, আসামিদের জ্ঞাতসারে এবং তাদের নির্দেশে এই অপরাধগুলো সংঘটিত হয়েছে।

এ বিষয়ে চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম বলেন,‘‘ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকে কেন্দ্র করে পতিত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আমরা এই মামলার অভিযোগ প্রমাণের জন্য যথেষ্ট তথ্য-প্রমাণ আদালতে দাখিল করেছি। এসব তথ্য-প্রমাণ হিমালয়ের মতো দৃঢ়, ক্রিস্টালের মতো স্বচ্ছ। পৃথিবীর যেকোনও আদালতে এই তথ্য-প্রমাণ উপস্থাপন করা হলে অপরাধীদের অপরাধ সুস্পষ্টভাবে প্রমাণিত হবে। এই আসামিদের বিরুদ্ধে অপরাধ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয়েছে।’’

অপরদিকে আসামিদের পক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী মো. আমির হোসেন বলেন, ‘‘২০২৪ সালের ১৪ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট প্রত‍্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে তিনি হত‍্যার কোনও নির্দেশ দেননি। এর কোনও দালিলিক প্রমাণ নেই। প্রসিকিউশন কোনও প্রমাণ দাখিলে ব‍্যর্থ হয়েছে। দেশে রাজাকারদের বিচার হয়েছে। তবু তিনি কখনও তাদের সরাসরি হত‍্যার নির্দেশ দেননি। তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ মিথ‍্যা-বানোয়াট। রংপুরে আবু সাইদের মৃত্যুর পর তিনি (শেখ হাসিনা) আবু সাইদের পরিবারের সঙ্গে দেখা করেছেন, সান্ত্বনা দিয়ে আর্থিক সহায়তা দিয়েছেন। বরং একটি বিশেষ মহল ধ্বংসাত্মক কার্যকলাপ করে দেশকে অস্থিতিশীল করেছে, পুলিশ হত‍্যা করেছে—যার এখনও কোনও বিচার হয়নি। এই মামলা থেকে তারা খালাস পাবেন

শেয়ারঃ

এই জাতীয় অন্যান্য সংবাদ
© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত © ২০২৪
Developed By UNIK BD