1. newstatini@gmail.com : নিউজ ডেস্কঃ : নিউজ ডেস্কঃ
  2. admin@newstatini.com : unikbd :
রবিবার, ৩০শে নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
১৫ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ,
৮ই জমাদিউস সানি, ১৪৪৭ হিজরি

পাঁচ লাখ কর্মী নেবে ইতালি, জানুন আবেদন প্রক্রিয়া

  • প্রকাশিতঃ রবিবার, ৩০ নভেম্বর, ২০২৫
নতুন ফ্লো ডিক্রি বা ডেক্রেতো ফ্লুসি অনুযায়ী পরিবহণ, কৃষি, নির্মাণ, উৎপাদনসহ গুরুত্বপূর্ণ খাতে আগামী তিন বছরে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) বাইরের দেশগুলো থেকে অন্তত পাঁচ লাখ কর্মী নিয়োগ দেবে ইতালি। পাশাপাশি ফ্রিল্যান্সার, স্টার্ট-আপ উদ্যোক্তা এবং স্বনির্ভর কর্মীদের জন্যও রাখা হয়েছে সীমিত সুযোগ।

২০২৬-২০২৮ মেয়াদের জন্য অনুমোদিত এই ফ্লো ডিক্রি বিদেশি কর্মীদের জন্য নিয়মিত অভিবাসনের পথ উন্মুক্ত করেছে। তবে প্রতারণা ও শোষণের ঘটনা বিবেচনায় বিশ্লেষকেরা এখনো এটিকে তুলনামূলক ঝুঁকিপূর্ণ বলে উল্লেখ করেছেন।

ইনফোমাইগ্রেন্টস ফ্লো ডিক্রিটি বিশ্লেষণ করে জানায়—ইতালিতে কাজ করতে আগ্রহী অভিবাসী কর্মীদের কোন কোন বিষয় জানা প্রয়োজন, সেগুলো স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়েছে এই নীতিতে।

ফ্লো ডিক্রি কী?

ফ্লো ডিক্রি হলো ইতালির সরকারের অভিবাসন পরিকল্পনা, যার মাধ্যমে নির্ধারিত হয়—ইইউ’র বাইরের দেশ থেকে কতজন কর্মী ইতালিতে আসতে পারবেন এবং তাদের জন্য কী শর্ত প্রযোজ্য হবে। এর মূল লক্ষ্য নিরাপদ অভিবাসন নিশ্চিত করা, শ্রমবাজারের ঘাটতি পূরণ এবং উৎস দেশগুলোর সঙ্গে সহযোগিতা জোরদার করা।

১৫ অক্টোবর প্রকাশিত ২০২৬-২০২৮ সালের ফ্লো ডিক্রি মৌসুমি, অ-মৌসুমি এবং স্বনির্ভর কর্মীদের জন্য নতুন নিয়ম অন্তর্ভুক্ত করেছে। এছাড়া নির্ধারিত কোটার বাইরে শরণার্থী, রাষ্ট্রহীন ব্যক্তি ও পরিচর্যাকারীদের জন্য রাখা হয়েছে বিশেষ সুযোগ।

এই তিন বছরে মোট ৪ লাখ ৯৭ হাজার ৫৫০টি কাজের অনুমতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। অর্থাৎ প্রতিবছর ১ লাখ ৬৪ হাজার ৮৫০ জন বিদেশি কর্মী ইতালিতে কাজের সুযোগ পাবেন।

আইওএম এই নীতিকে ‘জীবনরক্ষাকারী ব্যবস্থা’ হিসেবে আখ্যা দিয়ে বলেছে—নিয়মিত অভিবাসনের সুযোগ বাড়ালে শ্রমঘাটতি যেমন কমে, তেমনি অনিয়মিত অভিবাসনের ঝুঁকিও হ্রাস পায়।

যেসব খাতে অ-মৌসুমি কর্মী নেওয়া হবে

* পরিবহন ও সরবরাহ

* ধাতব ও যান্ত্রিক কাজ

* পর্যটন

* কৃষি ও কৃষিজ পণ্য

* নির্মাণ

* উৎপাদন

স্বনির্ভর বা আত্মকর্মসংস্থানকারী ব্যক্তিদের জন্যও উদ্যোক্তা, ফ্রিল্যান্সার, শিল্পী ও স্টার্ট-আপ ক্যাটাগরিতে আলাদা কোটা নির্ধারিত আছে।

অগ্রাধিকার দেওয়া হবে—

* নিরাপদ অভিবাসনে ইতালির সঙ্গে সহযোগিতাকারী দেশের কর্মীদের

* ইতালীয় বংশোদ্ভূত ভেনেজুয়েলা ও অন্যান্য দেশের কর্মীদের

* শরণার্থী ও রাষ্ট্রহীন ব্যক্তিদের

* পারিবারিক যত্ন ও সামাজিক স্বাস্থ্য সহায়তাকারীদের

নতুন যেসব সুবিধা যোগ হয়েছে

* নিয়োগে নতুন নতুন খাত অন্তর্ভুক্ত

* উৎস দেশে বাড়তি প্রশিক্ষণ সুবিধা

* নিয়মিত ও নিরাপদ অভিবাসনের জন্য রাষ্ট্রীয় সহযোগিতা বৃদ্ধি

* উচ্চ দক্ষ কর্মীদের জন্য প্রণোদনা

* শিক্ষা বা প্রশিক্ষণ পারমিটকে ওয়ার্ক পারমিটে রূপান্তরের সুযোগ

* ডিজিটাল ব্যবস্থায় দ্রুত আবেদন প্রক্রিয়া

অভিবাসী কর্মীকে নিয়োগ দিতে চাইলে তার আবেদন করতে হবে নিয়োগকর্তাকেই। ভারত, শ্রীলঙ্কা, মরক্কো, আলজেরিয়া, সেনেগাল, পেরু, টিউনিশিয়া ও ইউক্রেনসহ বেশ কিছু দেশের সঙ্গে ইতালির অভিবাসন সহযোগিতা চুক্তি রয়েছে। এসব দেশের নাগরিকরা অগ্রাধিকার পাবেন।

মৌসুমি কর্মীদের জন্য নির্দেশনা

মৌসুমি কর্মীরা সাধারণত অস্থায়ী কাজের জন্য ইতালিতে যান—যেমন কৃষিকাজ (ফসল কাটা, রোপণ), বা পর্যটন খাত (হোটেল, রিসোর্ট, রেস্তোরাঁ)।

প্রাধিকার পাবে—

* ইতালি–চুক্তিবদ্ধ দেশের নাগরিকরা

* গত পাঁচ বছরে ইতালিতে কাজ করা মৌসুমি কর্মীরা

* কৃষি ও পর্যটন শিল্পের অভিজ্ঞ কর্মীরা

আগে কাজ করে থাকলে কয়েক বছরের মৌসুমি পারমিটও পাওয়া যেতে পারে।

ইতালিতে বসবাসরত অভিবাসীদের জন্য সুযোগ

২০২৬–২০২৮ সালের ফ্লো ডিক্রিতে অনিয়মিত অভিবাসীদের জন্যও বিশেষ সুযোগ রয়েছে। এর মধ্যে—

* প্রশিক্ষণ সম্পন্ন রাষ্ট্রহীন ব্যক্তি ও শরণার্থী

* পড়াশোনা বা প্রশিক্ষণ সম্পন্ন করে পারমিট পরিবর্তন করতে ইচ্ছুকরা

* পারিবারিক যত্ন, বয়স্ক বা প্রতিবন্ধী সহায়তাকারী কর্মীরা

* চুক্তিবদ্ধ দেশের নাগরিকরা

যাদের কাগজপত্র নেই, কিন্তু গৃহস্থালি ও পরিচর্যার কাজে নিযুক্ত, তাদের ক্ষেত্রে নিয়োগকর্তা আবেদন করলে সম্ভাবনা তৈরি হতে পারে।

নিয়োগকর্তাদের করণীয়

নিয়োগকর্তাদের ২৩ অক্টোবর থেকে ৭ ডিসেম্বরের মধ্যে আবেদন প্রস্তুত করতে হবে এবং নির্ধারিত ক্লিক-ডে অনুযায়ী জমা দিতে হবে—

১২ জানুয়ারি: কৃষিখাতে মৌসুমি কর্মী

৯ ফেব্রুয়ারি: পর্যটনখাতে মৌসুমি কর্মী

১৬ ফেব্রুয়ারি: চুক্তিবদ্ধ দেশের অ-মৌসুমি কর্মী

১৮ ফেব্রুয়ারি: অন্যান্য অ-মৌসুমি কর্মী

মজুরি, বাসস্থান ও কর্মীর প্রয়োজনীয়তা প্রমাণ করে আবেদন জমা দিতে হবে। নির্ধারিত শর্ত না মানলে আবেদন বাতিল হবে।

প্রতারণা ও জালিয়াতির ঝুঁকি

পাচারবিরোধী হটলাইন ২০২৪ সালকে ‘প্রতারণার বছর’ বলে উল্লেখ করেছে। অনেক ক্ষেত্রে ফ্লো ডিক্রিকে কেন্দ্র করেই প্রতারণা হয়েছে। মধ্যস্থতাকারীরা ভিসা বা চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে অভিবাসীদের কাছ থেকে টাকা নিয়েছে—টাকা পাওয়ার পর তারা গায়েব হয়ে যায়।

তিউনিশিয়া, মরক্কো, ভারত ও মিসর থেকে আসা কমপক্ষে ১৩৯ জনকে এভাবে প্রতারিত করা হয়েছে—যদিও প্রকৃত সংখ্যা আরও বেশি হতে পারে। এই ধরনের জালিয়াতি অভিবাসীদের শ্রম শোষণের ঝুঁকি বাড়িয়ে দিচ্ছে।

শেয়ারঃ

এই জাতীয় অন্যান্য সংবাদ
© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত © ২০২৪
Developed By UNIK BD