এবার বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, আগামী ২৫ তারিখে তিনি দেশে ফিরবেন, তবে সেদিন কাউকে লন্ডনের এয়ারপোর্টে না যাওয়ার জন্য অনুরোধ জানিয়েছেন। এয়ারপোর্টে ভিড় বা হট্টগোল হলে দেশের ও দলের সুনাম ক্ষুণ্ন হতে পারে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) লন্ডনে যুক্তরাজ্য বিএনপি আয়োজিত মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে এক আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে এসব কথা বলেন তিনি।
তিনি বলেন, দীর্ঘ প্রায় ১৮ বছর যুক্তরাজ্যে অবস্থানকালে বিভিন্ন সময়ে বহু মানুষের সঙ্গে তার দেখা হয়েছে এবং অসংখ্য স্মৃতি তৈরি হয়েছে। এই সময়ের দুঃখ-কষ্ট ও অভিজ্ঞতা তিনি প্রবাসীদের সঙ্গে ভাগ করে নিয়েছেন বলেও উল্লেখ করেন।তারেক রহমান বলেন, যারা তার অনুরোধ রেখে সেদিন এয়ারপোর্টে যাবেন না, তিনি ধরে নেবেন তারা দল ও দেশের স্বার্থ এবং সম্মানের প্রতি শ্রদ্ধা রেখেছেন। আর অনুরোধ অমান্য করে যারা এয়ারপোর্টে যাবেন, তাদের তিনি ব্যক্তিগত স্বার্থে গিয়েছেন বলে বিবেচনা করতে বাধ্য হবেন।
তিনি আরও বলেন, এ দিনের আয়োজনের দুটি তাৎপর্য রয়েছে-একদিকে ১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবস, অন্যদিকে প্রায় ১৭-১৮ বছর যুক্তরাজ্যে অবস্থানের পর আগামী ২৫ তারিখে তার দেশে প্রত্যাবর্তন।নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানিয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, সামনের দিনগুলো সহজ হবে না। তবে ঐক্য বজায় রাখতে পারলে দলীয় পরিকল্পনাগুলো বাস্তবায়ন সম্ভব হবে এবং প্রত্যাশিত বাংলাদেশ গড়ে তোলা যাবে।
আসন্ন জাতীয় নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, দুমাস পর বহুল প্রত্যাশিত এই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। একটি দায়িত্বশীল রাজনৈতিক দল হিসেবে জনগণকে সচেতন করা এবং তাদের সামনে সুস্পষ্ট পরিকল্পনা তুলে ধরা বিএনপির গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব।তারেক রহমান বলেন, তিনি কোনো স্বপ্নে বিভোর নন, বরং পরিকল্পনার মধ্যেই রয়েছেন। শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ও খালেদা জিয়া সংকটময় সময়ে দেশকে খাদ্যসংকট থেকে রক্ষা করেছিলেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, বিএনপি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করে জনগণের সমর্থনে আগামী নির্বাচনে সরকার গঠন করা সম্ভব হবে, যদিও সামনে পথ অত্যন্ত কঠিন।
বক্তব্যে তিনি দলের ৩১ দফা সংস্কার ও উন্নয়ন পরিকল্পনার কথাও তুলে ধরেন। এর মধ্যে রয়েছে অসচ্ছল পরিবারের জন্য মাইক্রোচিপ সংযুক্ত ‘ফ্যামিলি কার্ড’, কৃষকদের জন্য ‘কৃষক কার্ড’, শিক্ষা খাতে শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ, মেধাবী শিক্ষার্থীদের শিক্ষক হিসেবে গড়ে তোলা, সহশিক্ষা কার্যক্রম ও খেলাধুলা জোরদার করা।এছাড়া সরকার গঠন করলে ‘কুঁড়ি’ টেলিভিশন অনুষ্ঠান নতুনভাবে সাজানো, প্রবাসীদের জন্য ভাষা শিক্ষার সুযোগ সৃষ্টি, রোগ প্রতিরোধে গুরুত্ব দিয়ে স্বাস্থ্যসেবা উন্নয়ন, পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপ চালু, কনটেন্ট ক্রিয়েটরদের আয় বাড়াতে সহায়তা, ছোট ওয়ার্কস্পেস, ফ্রি ওয়াই-ফাই ও ভোকেশনাল ইনস্টিটিউট স্থাপনের পরিকল্পনার কথাও জানান তিনি।
তিন থেকে ছয় মাসের মধ্যে এসব উদ্যোগের সুফল জনগণ পাবে বলেও আশ্বাস দেন তারেক রহমান।
স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে প্রবাসীদের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ উল্লেখ করে তারেক রহমান বলেন, ঐক্য বজায় রাখতে পারলেই একটি জবাবদিহিমূলক রাষ্ট্রব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব।