রোববার বিচারপতি নাইমা হায়দার ও বিচারপতি কাজী জিনাত হক সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন। একইসঙ্গে হাতির ওপর নির্যাতন ও নিষ্ঠুরতা বন্ধে কর্তৃপক্ষের নিষ্ক্রিয়তা কেন অবৈধ হবে না এবং হাতিকে বিনোদনের কাজে ব্যবহারের জন্য ব্যক্তি মালিকানা নতুন করে লাইসেন্স ও লাইসেন্স নবায়ন কেন অবৈধ হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করা হয়েছে।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী ব্যারিস্টার সাকিব। গত ১৮ ফেব্রুয়ারি অভিনেত্রী জয়া আহসান এ রিট দায়ের করেন।
হাতিকে সার্কাসের কাজে ব্যবহারের জন্য বনবিভাগ যে লাইসেন্স দিয়ে থাকে, সেই এখতিয়ার নিয়ে প্রশ্ন তুলে রিট আবেদনে বলা হয়, সার্কাস ও চাঁদাবাজিতে বাধ্য করতে মা হাতির কাছ থেকে শাবককে ছাড়িয়ে নিয়ে নির্মম অত্যাচারের মধ্য দিয়ে প্রশিক্ষিত করা হয়। মাহুত একটি ধাতব হুক হাতে নিয়ে বসে থাকে, যা দিয়ে সে হাতির শরীরের বিভিন্ন দুর্বল স্থানে আঘাত করে চাঁদাবাজিসহ মানুষের ওপর চড়াও হতে বাধ্য করে। এই প্রক্রিয়া বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা আইন, ২০১২ এবং প্রাণিকল্যাণ আইন, ২০১৯ এর পরিপন্থি।
মানুষের নিয়ন্ত্রণে রেখে হাতিকে সার্কাসে ব্যবহার, হাতির পিঠে ভ্রমণ, বিয়েবাড়িতে শোভাবর্ধন এবং বাণিজ্যিক ও রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠানের শোভাযাত্রায় বিজ্ঞাপনের মতো প্রাণীটিকে ব্যবহার করা হচ্ছে বলে রিট আবেদনে বলা হয়েছে।
এদিকে, পিপল ফর এনিমেল ওয়েলফেয়ার ফাউন্ডেশনের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, অমানুষিক নির্যাতনের মাধ্যমে হাতির প্রশিক্ষণ বন্ধ করা, বিনোদনের কাজে ব্যবহার না করা, চাঁদাবাজি বন্ধ করাসহ নানা দাবিতে সংগঠনটি বেশ কয়েক বছর ধরে বিভিন্ন কর্মসূচি দিয়ে আসছে। দুইবার বন ভবন ঘেরাও করেছেন প্রাণী অধিকার কর্মীরা।
ওই সময় বন বিভাগের পক্ষ থেকে নানা প্রতিশ্রুতি দেয়া হলেও কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি এবং নির্যাতিত হাতির বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে দফায় দফায় চিঠি দেয়া হলেও উপযুক্ত জবাব আসেনি বলে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়।
এতে আরও বলা হয়, নির্যাতনের শিকার হাতি প্রায়ই ক্ষোভ ও যন্ত্রণার বহিঃপ্রকাশ ঘটায়। ফলে লোকালয়ে ঢুকে তাণ্ডব চালায়; অনেকের প্রাণহানিও ঘটায়। কতিপয় অসৎ ব্যক্তির অনৈতিক ব্যবসা ও বেআইনি চাঁদাবাণিজ্যকে প্রশ্রয় দিতে গিয়ে জনগণের জানমালের এই ক্ষতি গ্রহণযোগ্য নয়।