সোমবার (১১ মার্চ) আপিল শুনানির আদেশের পর শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার নির্দেশনার অপেক্ষায় থাকে প্রতিষ্ঠানগুলো। তবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থা মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর, কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তর, মাদরাসা শিক্ষা অধিদপ্তর এবং প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর থেকে কোনো নির্দেশনা দেয়া হয়নি। এই অনিশ্চয়তার মধ্যে রাজধানীর অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নিজেরাই বন্ধ ঘোষণা করেছে। আবার অনেক প্রতিষ্ঠান এখনও স্কুল খোলা রেখেছে।
এ বিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত জানতে চাইলে জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. আবুল খায়ের গণমাধ্যমকে জানান, রমজানে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা থাকবে নাকি বন্ধ থাকবে তা এখন নির্ভর করছে উচ্চ আদালতের আদেশের ওপর। আজ যেহেতু আপিল বিভাগ চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দেননি, তাই হাইকোর্টের আদেশ বহাল থাকবে এমনটা ধরে নিয়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো আদালতের আদেশ মানবে।
এদিকে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক নেহাল আহমেদ গণমাধ্যমে বলেন, আমরা রিট করিনি। তা ছাড়া রিটের আদেশের বিরুদ্ধে আপিল করেছে মন্ত্রণালয়। সে কারণে মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত কিংবা অ্যাটর্নি জেনারেলের নির্দেশনা অনুযায়ী আমরা ব্যবস্থা নেব। আগামীকাল আপিলের চূড়ান্ত রায় হলে সে অনুযায়ী মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা মোতাবেক পরবর্তী নির্দেশনা দেবো।
অপরদিকে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র তথ্য অফিসার মাহবুবুর রহমান তুহিন বলেন, আগামীকাল হাইকোর্টে শুনানি হবে, শুনানির পর এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে।
তবে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উচ্চপর্যায়ের একটি সূত্র জানিয়েছে, যেহেতু হাইকোর্টের দেয়া আদেশ বলবৎ আছে, তাই আগামীকাল বিদ্যালয় খোলার বিষয়ে তারা কোনো নির্দেশনা দেবে না।
এ ছাড়া একটি গণমাধ্যম সূত্রে জানা যায়, দুটি বিদ্যালয় এরই মধ্যে তাদের প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করছে। এর মধ্যে ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজ কর্তৃপক্ষ এক নির্দেশনায় বলেছে, আগামীকাল তাদের ‘স্কুল শাখার’ শ্রেণি পাঠদান বন্ধ থাকবে। মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের নির্দেশনা পাওয়ামাত্রই পরবর্তী সিদ্ধান্ত জানানো হবে।
অপরদিকে ঢাকা রেসিডেনসিয়াল মডেল কলেজ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, আগামীকাল তৃতীয় শ্রেণি থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত শ্রেণি পাঠদান বন্ধ থাকবে। তবে কলেজের একাদশ শ্রেণির পাঠদান যথারীতি চলবে।
উল্লেখ্য, সোমবার (১১ মার্চ) রমজান মাসে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্কুল বন্ধ রাখতে হাইকোর্টের আদেশ আপাতত বহাল রেখেছেন আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত। একইসঙ্গে এ নিয়ে আপিল শুনানির জন্য মঙ্গলবার (১২ মার্চ) দিন ধার্য করেছেন আদালত।
এর আগে গত ১০ মার্চ রমজান মাসজুড়ে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্কুল খোলা রাখা সংক্রান্ত শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত স্থগিত করেন হাইকোর্ট। এক শিক্ষার্থীর অভিভাবকের করা রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে গত ১০ মার্চ হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
গত ৮ ফেব্রুয়ারি ছুটির তালিকা ও শিক্ষাপঞ্জিকা আংশিক সংশোধন করে রমজানে ১৫ দিন মাধ্যমিক পর্যায়ের স্কুল খোলা রাখার সিদ্ধান্ত জানায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়। আর প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় রমজানে ১০ দিন ক্লাস চালু রাখার সিদ্ধান্ত নেয়। সরকারের এই বিজ্ঞপ্তি দুটি চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট করেন এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক।