1. [email protected] : নিউজ ডেস্কঃ : নিউজ ডেস্কঃ
  2. [email protected] : unikbd :
বুধবার, ২২শে জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
৮ই মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ,
২১শে রজব, ১৪৪৬ হিজরি

প্রথম টি-টোয়ন্টি বিশ্বকাপের উত্তেজনার মুহুর্তগুলো

  • প্রকাশিতঃ শুক্রবার, ২২ মার্চ, ২০২৪

জুন মাসেই বসতে যাচ্ছে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট বিশ্বকাপের ওয়ার্ল্ড কাপ আসর। তা মাথায় রেখে প্রতিদ্বন্দ্বী দলগুলো এখনই জয় পাবার পরিকল্পনায় ব্যস্ত। ক্রিকেট অনুরাগীরাও শুরু করে দিয়েছেন নিজেদের পছন্দের দলের হালের পারফরমেন্স নিয়ে আলোচনা। চলুন এই ফাঁকে দেখে আসি প্রথম টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের কিছু মজার তথ্য।

প্রথম টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ অনুষ্ঠিত হয় ২০০৭ সালে আফ্রিকায়। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট পুরোপুরি জনপ্রিয় হবার আগেই এই সংস্করণের বিশ্বকাপ শুরু করে দেয় আইসিসি। বিশ্বকাপের আগে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি হয়েছিল মোটে ১৯টি।  এ বিশ্বকাপে ঘটে যাওয়া কিছু ঘটনা :

ক্রিকেট ম্যাচে প্রথম ট্রাইবেকার :

ইতিহাসে ওই একবারই ক্রিকেট ম্যাচের ফল নির্ধারণ হয়েছিল ট্রাইবেকারের মাধ্যমে। যেটির কেতাবি নাম দেওয়া হয়েছিল ‘বোল আউট।’ এতে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী পাকিস্তানকে ৩-০তে হারিয়েছিল ভারত।

ম্যাচটি টাই হওয়ায় আইসিসি এ ব্যবস্থা গহণ করেছিল। অনেকটা ছিল ফুটবলের টাইব্রেকারের আদলেই। দুই দল থেকে ৫ জন করে মনোনীত করতে হতো, ২২ গজে একে একে বোলিং করে বল লাগাতে হতো ফাঁকা স্টাম্পে। যে দল বেশিবার লাগবে, তারা জয়ী।

ডারবানে সেদিন ১৪২ রান তাড়ায় এক পর্যায়ে পাকিস্তানের প্রয়োজন ছিল ১৪ বলে ৪২ রান। মিসবাহ-উল-হক বিশ্বক্রিকেটে নিজেকে প্রথম জানান দেন সেদিনই। শেষ দিকে ঝড়ো ব্যাটিংয়ে দলকে তিনি নিয়ে যান জয়ের কিনারায়। শেষ ২ বলে প্রয়োজন পড়ে স্রেফ ১ রানের। শ্রীশান্থের করা ওই ওভারে পঞ্চম বলে রান নিতে পারেননি মিসবাহ, শেষ ওভারে সিঙ্গেল নিতে গিয়ে হয়ে যান রান আউট। ম্যাচ ‘টাই।’

এরপর সেই বোল আউট। সেখানে পাকিস্তান ভরসা রাখে তাদের মূল বোলারদের ওপর। কিন্তু ভারত বেছে নেয় স্পিনারদের এবং পার্ট টাইমারদের। পাকিস্তানের পেসার ইয়াসির আরাফাত ও উমর গুল বড় রান আপ নিয়ে ছুটে এসে ব্যর্থ হন স্টাম্পে লাগাতে। ভারতের হয়ে বিরেন্দর শেবাগ, হরভজন সিং এবং রবিন উথাপা পরপর তিনজনই স্ট্যাম্পে হিট করতে সক্ষম হয়।

অন্যদিকে পাকিস্তানের শহীদ আফ্রিদির বল চলে যায় লেগ স্টাম্পের বাইরে দিয়ে। ৩-০তে জিতে বাঁধনহারা উদযাপনে মেতে ওঠে ভারত।

বাংলাদেশের চমক:

ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারিয়েই বিস্ময় উপহার দেয় বাংলাদেশ। ওয়েস্ট ইন্ডিজ ২০ ওভারে তোলে ১৬৪ রান।

রান তাড়ায় বাংলাদেশ দুই ওপেনারকে দ্রুত হারালেও তা বুঝতেই দেননি আফতাব আহমেদ ও মোহাম্মদ আশরাফুল। চোখধাঁধানো সব স্ট্রোকের মাধ্যমে সবাইকে তাক লাগিয়ে দেন দুজন। ২০ বলেই পঞ্চাশ ছুঁয়ে ফেলেন অধিনায়ক আশরাফুল, সেসময় যা ছিল টি-টোয়েন্টিতে দ্রুততম ফিফটির বিশ্বরেকর্ড।

২৭ বলে ৬১ করে আউট হন আশরাফুল। আফতাব অপরাজিত থাকেন ৪৯ বলে ৬২ রানে। বাংলাদেশ ৬ উইকেটে ম্যাচ জিতে নেয় ২ ওভার বাকি রেখেই।

এই ম্যাচের আগের দিনই অস্ট্রেলিয়াকে ৫ উইকেটে হারিয়ে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের প্রথম অঘটনের জন্ম দেয় জিম্বাবুয়ে।

যুবরাজের ৬ ছক্কা:

২০০৭ ওয়ানডে বিশ্বকাপে নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে ম্যাচে হার্শেল গিবস আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে উপহার দেন ওভারে ছয় ছক্কার প্রথম নজির।

গিবসের ৬ মাস পরই টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের মধ্যে এই রের্কড করে বসেন যুবরাজ সিং। ডারবানে ভারতীয় ইনিংসের ১৯তম ওভারে ব্রডের করা ৬ বলের ৬ টি’তেই ওভার বাউন্ডারি হাকান যুবরাজ।

১২ বলে ফিফটি করেন সেদিন যুবরাজ, যে রেকর্ড টিকে আছে এখনও।

এই ম্যাচের ঠিক দুই সপ্তাহ আগে ওভালে একটি ওয়ানডেতে যুবরাজের এক ওভারে ৫টি ছক্কা মারেন ইংল্যান্ডের দিমিত্রি মাসকারেনহাস। টি-টুয়ন্টি বিশ্বকাপের ম্যাচটিতেও মাঠে ছিলেন মাসকারেনহাস। তাকে স্বাক্ষী রেখেই ইতিহাসে নাম লেখান যুবরাজ।

মিসবাহর স্কুপ :

সম্ভবত ক্রিকেট ইতিহাসের সবচেয়ে বিখ্যাত (কিংবা কুখ্যাত) স্কুপ! মিসবাহ-উল-হকের স্কুপ বললে ক্রিকেট অনুসারীমাত্রই বুঝে যান, কোন শটের কথা বলা হচ্ছে।

প্রথম টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ফাইনাল, দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ভারত-পাকিস্তানের লড়াই। শুধু উপমহাদেশ নয়,পুরো বিশ^ই তখন তাকিয়ে ছিল এ ম্যাচের দিকে।

গৌতম গম্ভীরের ৫৪ বলে ৭৫ রানের ইনিংসে ভারত তোলে ২০ ওভারে ১৫৭ রান। রান তাড়ায় পাকিস্তানের রান ১৬ ওভার শেষে দাঁড়ায় ৭ উইকেটে ১০৪। মিসবাহ তখন উইকেটে ২৪ বলে ১৭ রান করে।

সেই মিসবাহ এরপর হরভজনের এক ওভারে মারেন তিন ছক্কা। পরের ওভারে শ্রীশান্থকে দুটি ছক্কা মারেন সোহেল তানভির। ভারত তানভিরকে ফিরিয়ে আরও এক উইকেট নিয়ে লড়াই চালিয়ে যায়। শেষ ওভারে পাকিস্তানের প্রয়োজন পড়ে ১৩ রান, উইকেট বাকি ১টি।

ভারতীয় অধিনায়ক মহেন্দ্র সিং ধোনি বল তুলে দেন আনকোরা যোগিন্দর শর্মার হাতে। মাত্র চতুর্থ টি-টোয়েন্টি খেলতে নামা মিডিয়াম পেসার প্রথম বলটি করেন ওয়াইড। তবে পুষিয়ে দেন প্রথম বৈধ বলে রান না দিয়ে। পরের বলে অফ স্টাম্পের বাইরে ফুল টস পেয়ে লং অফের ওপর দিয়ে ছক্কায় ভাসিয়ে দেন মিসবাহ।

৪ বলে প্রয়োজন ৬ রান। তখনই সেই মুহূর্ত। স্টাম্পে থাকা ফুল লেংথ বল স্কুপ করেন মিসবাহ। ফাইন লেগ ফিল্ডার ছিল বৃত্তের ভেতরে। তাই মিসবাহর ভাবনা ছিল ফিল্ডারের মাথার ওপর দিয়ে পার করাতে পারলেই চার। কিন্তু যোগিন্দর শর্মার বলে পেস ছিল কম। ওই বলটিতে মিসবাহ অনেকটা শাফল করে অফ স্টাম্পের বাইরে থেকে স্কুপ করতে গিয়ে টাইমিং করতে পারেননি। বল উঠে যায় স্রেফ ওপরে, শর্ট ফাইন লেগে সহজ ক্যাচ নেন শ্রীশান্থ।

বিশ্বজয়ের আনন্দে মেতে ওঠে ভারত। হতাশায় ব্যাটে ভর দিয়ে হাঁটু গেড়ে বসে থাকেন মিসবাহ। দুই দলের গ্রুপ পর্বের লড়াইয়ের মতোই শেষ পর্যন্ত হারতে হয় পাকিস্তানকে।

 

 

শেয়ারঃ

এই জাতীয় অন্যান্য সংবাদ
© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত © ২০২৪
Developed By UNIK BD