1. [email protected] : নিউজ ডেস্কঃ : নিউজ ডেস্কঃ
  2. [email protected] : unikbd :
সোমবার, ২০শে জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
৬ই মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ,
১৯শে রজব, ১৪৪৬ হিজরি

রমজান মাসে রোজাদারের করণীয় ও বর্জনীয়

  • প্রকাশিতঃ বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪
 সিয়াম সাধনার এ মাস মুমিনদের জন্য অতি ফজিলতপূর্ণ একটি মাস। এ মাসে আল্লাহ তায়ালা প্রত্যেক নেক কাজের এত বেশি প্রতিদান দেন যা অন্য কোনো মাসে দেন না। এ মাসে আল্লাহ তায়ালা মুমিনদের জন্য একমাস রোজা রাখা ফরজ করে দিয়েছেন। রমজান মাসে রোজা রাখা ইসলামের প্রধান বুনিয়াদগুলোর একটি বুনিয়াদ। আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘হে ঈমানদারগণ, তোমাদের জন্য সিয়াম ফরজ করা হয়েছে যেমনিভাবে তোমাদের পূর্ববর্তীদের উপর ফরজ করা হয়েছিল যেন তোমরা সফলকাম হতে পার।’ (সুরা বাকারা : ১৮৩)। এ মাসকে আল্লাহ তায়ালা কুরআন নাজিলের মাধ্যমে অন্য সকল মাস থেকে অধিকতর সম্মানিত করেছেন। এ মাসের এমন একটি রাত রয়েছে যার মর্যাদা হাজার মাসের চেয়ে বেশি, সেই রাতটি হলো লাইলাতুল কদর। আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘নিশ্চয় আমি তা নাজিল করেছি কদরের রাতে। আর আপনি কি জানেন কদরের রাত কি? কদরের রাত হাজার মাসের চেয়েও উত্তম। এ রাতে ফেরেশতাগণ ও রূহসমূহ নাজিল হয় তাদের রবের অনুমতিক্রমের প্রত্যেক দিক থেকে। সেখানে সূর্যোদয় পর্যন্ত শান্তি বর্ষিত হতে থাকে।’( সুরা কদর : ১-৫)।

 

 

গোনাহ বর্জন
রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম বলেন, ‘অনেকে রোজার দ্বারা ক্ষুধার্ত এবং তৃষ্ণার্ত ছাড়া অন্য কিছুই লাভ করে না। অন্য এক হাদিস শরিফে বলেন, ‘যে গর্হিত কথাবার্তা এবং পাপ কাজ পরিত্যাগ করতে পারে না, আল্লাহ সুবহানাহু তাআলার তার খাবার এবং পানীয় ত্যাগ করায় কোনো প্রয়োজন নেই। কারণ, তার রোজা গ্রহণীয় নয়।

 

সবরকম গোনাহ থেকে বেঁচে থাকতে হবে। এর মধ্যে আর একটি ভয়াবহ গোনাহ হোলো গীবত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লামের যুগে দুই মহিলা রোজা রাখল। রোজায় তাদের এত কষ্ট হলো যে, তারা মৃত্যুর মুখোমুখি হলো। রসুলুল্লাহ (সা.)-কে বিষয়টি জানানো হলে তিনি তাদের কুলি করতে বললেন। তারা কুলি করলে তাদের মুখ থেকে ছোটো গোস্তের টুকরা বের হলো। তারা আশ্চর্য হয়ে বলল, আমরা তো কোনো পানাহারই করিনি। রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম বললেন, মূলত তোমরা রোজা রেখে অন্যের গীবত করেছ। আর গীবত হোলো মৃত ভাইয়ের গোস্ত খাওয়া।

 

অন্যান্য গোনাহ
আসুন এই রোজায় সমস্ত গোনাহ থেকে তওবা করে ফেলি। মনে করি এটাই আমাদের শেষ রোজা। যারা মোবাইলে গান শোনেন তারা অন্তত এই মাসটা গান বন্ধ রাখুন, এর পরিবর্তে কোরআন তেলাওয়াত, হামদ, কাসিদা শুনুন। আশরাফ আলী থানভী (রহ.) বলেন, কেউ কি কখনও বলে এটা ছোট আগুন ওটা বড় আগুন। ছোট হোক, বড় হোক পুড়িয়ে ধংস করার জন্য এক শলতে আগুনই যথেষ্ট। তেমনি গোনাহ ছোট হোক বা বড় হোক সব ক্ষতিকর।

 

 

নেককারদের আমল

 

রমজান মাসে বিশেষ কিছু সুন্নত রয়েছে, যথা- বিশ রাকাত তারাবিহ সালাত আদায় করা, সেহরি খাওয়া, তাহাজ্জুদ নামাজ আদায় করা, ইফতার করা ও করানো, কোরআন করিম বেশি বেশি তিলাওয়াত করা এবং শেষ দশ দিন ইতিকাফ করা।

 

রমজানে প্রতিটি ইবাদতের বিনিময় সত্তরগুণ বৃদ্ধি করে দেওয়া হয়। একটি নফল পালন করলে একটি ফরজ পালন করার সমান সওয়াব পাওয়া যায়। তাই রমজান মাসে নফল ইবাদত খুবই গুরুত্বপূর্ণ। রমজান মাসের বিশেষ নফল আমলসমূহ হলো- কোরআন মাজিদ একাধিকবার খতম বা পূর্ণ পাঠ করা; কালিমা তৈয়্যবা বেশি বেশি পাঠ করা; দরুদ শরিফ বেশি বেশি পাঠ করা; তওবা ও ইস্তিগফার করতে থাকা; সর্বদা তসবি তাহলীল ও জিকির করতে থাকা; দীনী শিক্ষা ও দীনী দাওয়াতি কাজে মশগুল থাকা; ধর্মীয় বই-পুস্তক, তাফসির, হাদিস, ফিকাহ ও ইসলামি সাহিত্য পড়া ও অন্যকে পড়তে সাহায্য করা; দীনী মজলিশ ও মাহফিল আয়োজন করা; অধীনস্থ কর্মচারী ও শ্রমিকদের কাজের চাপ কমিয়ে দেওয়া এবং তাদের পূর্ণ মজুরি ও অতিরিক্ত সম্মানী প্রদান করা; বেশি বেশি দান খয়রাত করা; ইহসান তথা সদা আল্লাহর অস্তিত্বের উপস্থিতির ধ্যান করা ও আল্লাহর সঙ্গ বাস্তবে অনুভব করা অথবা আল্লাহর সার্বক্ষণিক নজরদারির চেতনা মনে জাগ্রত রাখা। (বুখারি: ৪৮)।

দুনিয়াবি ব্যস্ততায় মগ্ন থাকা

ইবাদতের মাস রমজানে বেশি বেশি আমলের কথা রয়েছে। কিন্তু আমরা অনেকেই ব্যস্ত থাকি দুনিয়াবি কাজে। এটা কাম্য নয়। এ মাসে বেশি বেশি দোয়া-ইস্তেগফার করা উচিত। হাদিসে এসেছে, ‘ইফতারের মুহূর্তে আল্লাহতায়ালা বহু লোককে জাহান্নাম থেকে মুক্তি দিয়ে থাকেন। মুক্তির এ প্রক্রিয়া রমজানের প্রতি রাতেই চলতে থাকে।’ (জামিউস সাগির: ৩৯৩৩)

শেয়ারঃ

এই জাতীয় অন্যান্য সংবাদ
© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত © ২০২৪
Developed By UNIK BD