1. [email protected] : নিউজ ডেস্কঃ : নিউজ ডেস্কঃ
  2. [email protected] : unikbd :
শুক্রবার, ১৩ই জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
৩০শে জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ,
১৬ই জিলহজ, ১৪৪৬ হিজরি

ছেলের মুখ থেকে বাবা ডাক শোনা হলো না শাহ আলমের

  • প্রকাশিতঃ শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪
রাঙামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলার শিজকছড়া-উদয়পুর সড়কের সাজেকে ডাম্প ট্রাক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ১০০ ফুট গভীর খাদে পড়ে নিহত ৯ জনের মধ্যে ছয়জনের বাড়িই ময়মনসিংহে। তাদের পাঁচজন ঈশ্বরগঞ্জ ও একজন গৌরীপুর উপজেলার বলে স্বজনদের মাধ্যমে নিশ্চিত হওয়া গেছে। বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) সন্ধ্যায় নিহতদের পরিচয় শনাক্ত হওয়ায় তাদের মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়।

এক ছেলে ও এক মেয়েকে নিয়ে সুখের সংসার। আট বছর বয়সী মেয়ে শাহনাজ দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়ে। পাঁচ মাস বয়সী একমাত্র ছেলে ইয়াছিন। ছেলে-মেয়েকে আদর করতে করতেই বাড়ি থেকে বের হয়ে যান আবু সাঈদ ওরফে শাহ্ আলম। যাওয়ার সময় স্ত্রী ফেরদৌসী আক্তারকে বলে গিয়েছিলেন দুইমাস পর কাজ থেকে ফিরে এলে একমাত্র ছেলে ইয়াছিনের মুখ থেকে তখন বাবা ডাক শুনতে পাবেন। কিন্তু তা আর হলো না!

গতকাল বুধবার রাঙামাটির সাজেকে ট্রাক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়ে নিহত ৯ শ্রমিকের একজন হলেন শিশু ইয়াছিনের বাবা। এখানেই শেষ নয়, ভয়াবহ ওই সড়ক দুর্ঘটনায় ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার একই গ্রামের তিন জনসহ ৫ জন শ্রমিক নিহত হয়েছেন। নিহত পাঁচ  জনের মধ্যে চারজনের লাশ উঠল বাবার কাঁধে। অপর একজনের বাবা মৃত।

নিহতারা হলেন উপজেলার তারুন্দিয়া ইউনিয়নের শ্রীপুরজিথর গ্রামের চান মিয়ার ছেলে মো. তফাজ্জল হোসেন (২১), হেলাল উদ্দিনের ছেলে মো. নয়ন মিয়া (২২), নজরুল ইসলামের ছেলে মো. মহন মিয়া (১৭), পার্শ্ববর্তী গিরিধরপুর গ্রামের মো. শহিদুল্লাহ’র ছেলে আবু সাঈদ ওরফে শাহ্ আলম (২৮),বড়হিত ইউনিয়নের মধ্য গ্রামের মৃত রিয়াসত আলীর ছেলে এরশাদুল ইসলাম (আশাদ)।

নিহতদের পরিবার সূত্রে জানা গেছে, নিহত পাঁচজন শ্রমিক গত মঙ্গলবার কাজের উদ্দেশ্য তারা বাড়ি থেকে বের হয়ে যান। পথে সড়ক দুর্ঘটনায় তারা নিহত হন। মর্মান্তিক এ দুর্ঘটনায় এলাকায় নেমে এসেছে শোকের ছায়া।

নিহত আবু সাঈদ ওরফে শাহ্ আলমের স্ত্রী ফেরদৌসী আক্তার আহাজারি করতে করতে বলেন,’আমার সব শেষ অইয়্যা গেছে গো। বাড়িত থাইক্যা যাওয়ার সময় স্বামী  কইয়্যা গেছিন দুই মাস পর আসার আইসা আমার ছেলে ইয়াছিনের মুখ থাইক্যা বাবা ডাক শুনবো গো। ও আল্লাহ গো আমার ছেলে ইয়াছিন এহন কারে বাবা ডাকবো গো। আমার সংসার কেলা চালাইবো গো…!

নিহত মহন মিয়ার বাবা নজরুল ইসলাম আহাজারি করে বলেন,’আমি আর কিছু চাইনা গো। তোমরা আমার ছেলেরে আইন্যা (এনে) দাও। সন্তানেরের লাশ কিভাবে আমি কাঁধে লইবাম গো।

 

তারুন্দিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হাসান মাহমুদ রানা বলেন,’সাজেকের দুর্ঘটনায় নিহত ৯ জনের মধ্যে ৫ জনের বাড়িই ঈশ্বরগঞ্জে। তারমধ্যে ৪ জনের বাড়ি আমার ইউনিয়নে। এ ঘটনায় আমি নিজেও খুবই মর্মাহত’।

ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আরিফুল ইসলাম প্রিন্স বলেন, খবরটি শুনে আমি অত্যন্ত ব্যথিত। নিহতদের দাফন-কাফনের জন্য ইতোমধ্যে উপজেলা প্রশাসন এবং উপজেলা পরিষদের পক্ষ থেকে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানদের মাধ্যমে  প্রতিটা পরিবারে ৫ হাজার টাকা করে দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া পরবর্তীতে বিধি মোতাবেক নিহতদের পরিবারে সর্বাত্মক সহযোগিতা করা হবে।

শেয়ারঃ

এই জাতীয় অন্যান্য সংবাদ
© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত © ২০২৪
Developed By UNIK BD