শনিবার (০৮ জুন) রাজধানীর দনিয়া থেকে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) কাছে গ্রেপ্তারের পর তিনি নিজেই এমন কথা স্বীকার করেন।
এক প্রশ্নের জবাবে লোকমান হোসেন জাকির বলেন, আমি ঈদ কেন্দ্রিক সব ব্যবস্থা করে রেখেছিলাম। সব ধরনের সরঞ্জামও কিনেছিলাম। দেড় থেকে দুই কোটি জাল টাকা বাজারে ছাড়তে চেয়েছিলাম। কিন্তু বাজারজাত করার আগেই গ্রেপ্তার হলাম।
জাল টাকার সরঞ্জাম সম্পর্কে তিনি বলেন, কাগজ, কালি, রং, পেপার সবই বৈধ। কিন্তু আমরা এইগুলো কিনে অবৈধ ব্যবহার করি।
জাল টাকা ও ভারতীয় রুপির ক্রেতাদের সম্পর্কে জাকির বলেন, ঢাকা, রাজশাহী, নাটোর, চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন জেলায় আমার ক্রেতা রয়েছে। তারা এসে নিয়ে যান। আর ভারতীয় রুপি রাজশাহীর একজনের কাছে বিক্রি করি। রাজশাহীর সীমান্ত এলাকা সোনা মসজিদ হয়ে এই জাল রুপি পাচার হয়।
দীর্ঘদিন জাল টাকার ব্যবসা ও মাঝে মাঝে গ্রেপ্তার হবার পরও কেন ব্যবসা ছাড়তে পারছেন না, এমন প্রশ্নের জবাবে লোকমান হোসেন জাকির বলেন, ছাড়তে পারছি না কারণ একেকটা মামলা খেয়ে ঋণগ্রস্ত হয়ে যাই। মামলার হাজিরা দিতে হয়, কোনো বৈধ কাজ না থাকায় ঋণ শোধ আর করা হয় না। তাই আবার এ পেশায় জড়িয়ে যাই।
এরআগে, শনিবার রাজধানীর যাত্রাবাড়ীর কদমতলী এলাকায় অভিযান চালিয়ে দেশি-বিদেশি জাল নোট তৈরি চক্রের মূলহোতাসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে ডিবি লালবাগ বিভাগ।
গ্রেপ্তাররা হলেন লিয়াকত হোসেন জাকির ওরফে মাজার জাকির ওরফে গুরু জাকির (৪০), তার দ্বিতীয় স্ত্রী মমতাজ বেগম (২৫), লিমা আক্তার রিনা (৪০) ও সাজেদা আক্তার (২৮)।
এ সময় তৈরি করা প্রায় সোয়া এক কোটি টাকা ও ভারতীয় রুপি এবং আরও প্রায় ৩ কোটি জাল টাকা তৈরি করার মতো বিশেষ কাপড়/কাগজ, বিশেষ ধরনের কালি, ল্যাপটপ, কম্পিউটার, চারটি প্রিন্টার, বিভিন্ন সাইজের কয়েক ডজন স্ক্রিন/ডাইস, সাদা কাগজ, হিটার মেশিন, নিরাপত্তা সূতাসহ জাল টাকার হরেক রকম মালামাল উদ্ধার করা হয়েছে।
ডিবি লালবাগ বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) মশিউর রহমান বলেন, গত ২৫ বছর ধরে জাল টাকার খুচরা ও পাইকারি ব্যবসা করার পাশাপাশি বিভিন্ন মানের জাল টাকা ও জাল রুপি তৈরিতে অত্যন্ত দক্ষ লিয়াকত হোসেন জাকির। তিনি ২০১২ সাল থেকে ৫০০ ও ১০০০ টাকার জাল নোট তৈরি করলেও বর্তমানে জনসাধারণ যাতে সন্দেহ না করে সেজন্য বড় নোট জাল করার পাশাপাশি ১০০ ও ২০০ টাকার নোটও জাল করতেন। জাকির ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকায় এক লাখ জাল টাকা বিক্রি করতেন।