পুরস্কারের আশায় রাসেলস ভাইপার ধরল যুবক। কিন্তু পুরস্কার পেতে হলে নিতে হবে বন বিভাগে জমা দিয়ে প্রাপ্তিস্বীকারপত্র। আর ওই পত্র দিতে অপারগতা প্রকাশ করেছে বন বিভাগ।
জীবিত রাসেল ভাইপার সাপ ধরে নিয়ে যেতে পারলে পুরস্কার পাবেন, এই আশায় একটি রাসেলস ভাইপার সাপের বাচ্চা ধরেছেন রেজাউল নামে এক যুবক। শুধু তাই নয়, সাপটি নিয়ে তিনি চলে আসেন ফরিদপুর প্রেসক্লাবে। তবে তার সম্ভবনা নেই টাকা পাওয়ার।
কারণ, ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শামীম হক সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, জীবিত হোক বা মৃত, কোনো প্রকার রাসেলস ভাইপারের জন্য কোনো পুরস্কার নেই।
উল্লেখ্য যে, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় এই আওয়ামী লীগ নেতা ঘোষণা করেন- রাসেল’স ভাইপার (চন্দ্রবোড়া, বোড়া বা উলুবোড়া) কোতোয়ালী থানায় কেউ মারলেই তাকে ৫০ হাজার টাকা পুরস্কার দেওয়া হবে। অথচ, ক্ষমতাসীন দলের জেলা কার্যালয়ে এই ঘোষণা দেওয়ার একদিন পরই তিনি তার বক্তব্য পাল্টে ফেলেন।
এরপর শুক্রবার সন্ধ্যায় জেলা আওয়ামী লীগ থেকে প্রেস বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানানো হয়, কেউ জীবিত রাসেল’স ভাইপার ধরে আনলে তাকে ৫০ হাজার টাকা দেওয়া হবে।
এ কথা শোনার পর যে যার মতো সাপ ধরে এনে পুরস্কারের দাবি করছেন। কিন্তু কোনো পুরস্কার ছাড়াই ফিরে যেতে হচ্ছে তাদের।
পরদিন (২২ জুন) শনিবার সকালে পদ্মার চর থেকে একটি জীবিত রাসেলস ভাইপার সাপ ধরেন রেজাউল নামে এক যুবক। শনিবার সন্ধ্যায় পাতিলের মধ্যে একটি জীবিত সাপ নিয়ে ফরিদপুর প্রেসক্লাবের সামনে হাজির হন সদর উপজেলার আলিয়াবাদ ইউনিয়নের কাদেরের বাজার এলাকার ওই যুবক।
রেজাউল বলেন, ‘সকালে চরের মধ্যে থেকে সাপটি ধরছি। সাপটা হাইট্যা যাইতেছিল। গায়ের গেঞ্জি ছুড়ে ওকে ধরছি। নেতারা পুরস্কার ঘোষণা করছেন। এজন্য রিস্ক নিয়ে ধরছি। এখন বনবিভাগে জমা দিতে আইছি।’
তবে রোববার দুপুরে ফরিদপুরের বনবিভাগের অফিসে সাপটি নিয়ে গেলে তাকে সাপসহ ফেরত পাঠিয়ে দেয়া হয়।
ফরিদপুরের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা গোলাম কুদ্দুস ভূঁইয়া বলেন, এ ধরনের পুরস্কার ঘোষণা করাটাইতো অবৈধ। মানুষকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলা। আমরা এটা প্রমাণ করতে যাব কেন? ওই কৃষকের উচিত হবে যেখান থেকে সাপটি ধরেছে ওই স্থানে ছেড়ে দেওয়া।
এদিকে রোববার দুপুরে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শামীম হক পুরস্কারের ঘোষণা প্রত্যাহারের বিষয়টি জানিয়ে সকলকে রাসেলস ভাইপার সাপ মারা বা ধরার চেষ্টা থেকে বিরত থাকতে অনুরোধ জানান।
শামীম হক তার ফেসবুক পোস্টে বলেন, জীবিত বা মৃত কোনো প্রকার রাসেলস ভাইপারের জন্য কোনো পুরস্কার নেই। তিনি বলেন, বর্তমানে রাসেল ভাইপার একটি আলোচিত বিষয়, পাশাপাশি জনগণের জন্য হুমকি স্বরূপ। এটি অত্যন্ত বিপজ্জনক বিধায় যেকোনো পুরস্কার বা কৌতূহল বশত এ সাপ নিয়ে অতি উৎসাহী হবেন না। জীবিত বা মৃত কোনো প্রকার রাসেলস ভাইপারের জন্য কোনো পুরস্কার নেই।
তিনি লিখেন, সাপ দেখলে তা ধরা বা মারার চেষ্টা করবেন না। প্রয়োজনে জাতীয় হেল্পলাইন ৩৩৩ নম্বরে কল করুন অথবা নিকটস্থ বন বিভাগের অফিসকে অবহিত করুন।