মঙ্গলবার (২ জুলাই) রাজ্যের হাতরাস জেলায় ‘শিব স্মরণে’ ভোলে বাবার এ ধর্মীয় অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে ভাষণ দিচ্ছিলেন ভোলে বাবা নিজেই।
মূলত তার ভাষণ শুনতেই ভক্তরা সৎসঙ্গ অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন।
হিন্দুস্তান টাইমস বলছে, জেলার সিকান্দ্রা রাও এলাকার রাতি ভানপুর গ্রামে বিশেষ তাঁবু টানিয়ে সৎসঙ্গ সভার আয়োজন করা হয়েছিল।
পুলিশ বলেছে, তাঁবু ঘেরা অনুষ্ঠানে এত বেশি মানুষ এসেছিল যে পরিস্থিতি দমবন্ধের মতো হয়ে গিয়েছিল। লোকেদের মধ্যে অস্বস্তি তৈরি হতেই তারা বাইরে বের হতে ছুটোছুটি শুরু করে। এ সময় ব্যাপক ধাক্কাধাক্কি হয়। অনুষ্ঠান চলাকালীন পরিবেশ খুব গরম ও আদ্র ছিল।
আলিগড় রেঞ্জের ইনসপেক্টর জেনারেল শলভ মাথুর গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, ধর্ম প্রচারক ভোলে বাবার অনুসারীরা অনুষ্ঠানটি আয়োজন করেন। তিনি সভা মঞ্চে ভাষণ দিচ্ছিলেন। ব্যক্তিগত অনুষ্ঠানটির জন্য অনুমতিও নিয়েছিলেন সংশ্লিষ্টরা।
অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়া এ ব্যক্তি জানিয়েছেন, ভোলে বাবার ভাষণের শেষ দিকে পদদলনের ঘটনাটি ঘটে। সবাই যে যার জায়গা ছেড়ে যেতে হুড়োহুড়ি করছিল।
ইটাহের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. উমেশ কুমার ত্রিপাঠি স্থানীয় গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, তারা হাতরাস থেকে আসা বহু মরদেহ পেয়েছেন। আহতদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আশিস কুমার, ইটাহের সিনিয়র সুপারিনটেনডেন্ট অব পুলিশ রাজেশ কুমারও হতাহতের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলেও জানিয়েছেন তারা।
উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ ঘটনাটি জানার পর তার নির্দেশে তদন্তের জন্য কমিটি গঠন করা হয়েছে। এ ছাড়া ভারতের রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু নিহতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন।
মাইক্রো ব্লগিং সাইট এক্সে দেওয়া এক পোস্টে মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ বলেছেন, হাতরাস জেলায় দুর্ভাগ্যজনক দুর্ঘটনায় প্রাণহানি অত্যন্ত দুঃখজনক এবং হৃদয়বিদারক। শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি আমার সমবেদনা। ঘটনাস্থলে ত্রাণ ও উদ্ধার কার্যক্রম পরিচালনা এবং আহতদের যথাযথ চিকিৎসার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
উত্তর প্রদেশ সরকারের মন্ত্রী লক্ষ্মী নারায়ণ চৌধুরী ও সন্দীপ সিং ঘটনাস্থলে যাচ্ছেন। পুলিশ মহাপরিচালককে ঘটনাস্থলে পৌঁছতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া এডিজি, আগ্রা ও আলিগড় কমিশনারের নেতৃত্বে একটি দল গঠন করা হয়েছে। তাদের দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধানের জন্য নির্দেশনাও দেওয়া হয়েছে।
তিনি নিহতদের আত্মার শান্তি ও আহতদের দ্রুত আরোগ্য প্রার্থনা করেন।
একই মাধ্যমে ভারতের রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু বলেছেন, হাতরাসে দুর্ঘটনায় শিশু-নারী ভক্তদের মৃত্যুর খবর হৃদয়বিদারক। যারা পরিবারের সদস্যদের হারিয়েছেন তাদের প্রতি গভীর সমবেদনা; আহতদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করছি।