1. [email protected] : নিউজ ডেস্কঃ : নিউজ ডেস্কঃ
  2. [email protected] : unikbd :
রবিবার, ৮ই ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
২৩শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ,
৫ই জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি

জোরপূর্বক ভিডিওবার্তা ও খাবার দেয়া হয়েছে: ৬ সমন্বয়কের বিবৃতি

  • প্রকাশিতঃ শুক্রবার, ২ আগস্ট, ২০২৪

 

  ডিবি অফিসে জোর করে আটকে রাখার অভিযোগ করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ছয় সমন্বয়ক।   প্রায় এক সপ্তাহ আটক রাখার পর গতকাল বৃহস্পতিবার ডিবি কার্যালয় থেকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ছয় সমন্বয়ককে। এরপর গতকাল তাদের মধ্যে দুই সমন্বয়ক সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিজেদের ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্টে আন্দোলন চলমান রাখার ঘোষণা দিলেও তার কিছুক্ষণের মধ্যেই তাদের সেসব পোস্ট ও আইডি উধাও হয়ে যায়।

তবে মুক্তি পাওয়া ছয় সমন্বয়ক (মো. নাহিদ ইসলাম, সারজিস আলম, হাসনাত আব্দুল্লাহ, আসিফ মাহমুদ, নুসরাত তাবাসসুম ও আবু বাকের মজুমদার) আজ শুক্রবার (২ আগস্ট) গণমাধ্যমে এক যৌথ বিবৃতি পাঠিয়েছেন। যেখানে সপ্তাহজুড়ে আলোচিত আন্দোলন প্রত্যাহার করার ভিডিওবার্তা ও ডিবির তখনকার অতিরিক্ত কমিশনার হারুন অর রশিদের সঙ্গে টেবিলে বসে একত্রে খাবার খাওয়ার বিষয়টি ‘জোরপূর্বক’ বলে উল্লেখ করেছেন তারা।

এদিকে গণমাধ্যমকে পাঠানো বিবৃতিতে তারা জানান, গত ২৬ জুলাই ঢাকার গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতাল থেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের তিন সমন্বয়ক মো. নাহিদ ইসলাম, আসিফ মাহমুদ ও আবু বাকের মজুমদারকে ডিবি পুলিশ জোরপূর্বক মিন্টো রোডের ডিবি অফিসে তুলে নিয়ে আসে। মো. নাহিদ ইসলাম ও আসিফ মাহমুদ হাসপাতালে চিকিৎসারত অবস্থায় ছিল।

 

 

গত ২৭ জুলাই সমন্বয়ক সারজিস আলম ও হাসনাত আব্দুল্লাহকে সাইন্সল্যাব থেকে জোরপূর্বক ডিবি অফিসে তুলে নিয়ে আসা হয়। ২৮ জুলাই সমন্বয়ক নুসরাত তাবাসসুমকে ভোররাতে বাসা ভেঙে জোরপূর্বক ডিবি অফিসে নিয়ে যাওয়া হয়। মূলত আন্দোলন ও নেতৃত্বকে ছত্রভঙ্গ করতেই ১৯ জুলাই থেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের গুম, গ্রেফতার, নির্যাতন ও হয়রানি করা হচ্ছে। এর ধারাবাহিকতায় ‘নিরাপত্তা’র নামে ছয় সমন্বয়ককে সাতদিন ধরে ডিবি হেফাজতে জোরপূর্বক আটকে রাখা হয়।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও ডিবি প্রধান নিরাপত্তার কথা বললেও আমাদেরকে আন্দোলন থেকে বিচ্ছিন্ন করে রাখার জন্যই ডিবি হেফাজতে রাখা হয়েছিল। আমরা গুম, গ্রেফতার ও নির্যাতন থেকে নিরাপত্তা ও নিশ্চয়তা চেয়েছিলাম। আমরা আমাদের মত প্রকাশের অধিকারের নিশ্চয়তা চেয়েছিলাম। কিন্তু অসাংবিধানিক ও আইনবহির্ভূতভাবে আমাদেরকে ডিবি হেফাজতে আটকে রাখা হয়। প্রথমে নিরাপত্তার কথা বললেও পরে আদালতের কথা বলা হয়। আদালতের আদেশ ছাড়া নাকি আমাদের ছাড়া যাবে না বলেও জানান তারা।

যৌথ বিবৃতিতে তারা বলেন, যারা নিরস্ত্র ছাত্র-নাগরিককে গুলি করে হত্যা করে তাদের হেফাজতে কেউই নিরাপদে থাকতে পারে না। সরকারের কাছে আমরা এই প্রহসনের নিরাপত্তা চাই না। আমরা আমাদের ভাই বোনদের খুনের বিচার চাই। আন্দোলন প্রত্যাহার করে ডিবি অফিস থেকে প্রচারিত ছয় সমন্বয়ককের ভিডিও স্টেটমেন্টটি আমরা স্বেচ্ছায় দেইনি। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কোনো সিদ্ধান্ত ডিবি অফিস থেকে আসতে পারে না। সারাদেশের সকল সমন্বয়ক ও আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ ব্যতীত কোনো সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত বলে গৃহীত হবে না।

ডিবি অফিসে আমাদের খাবার টেবিলে বসিয়ে জোর করে ভিডিও করা হয় জানিয়ে বিবৃতিতে তারা জানান, আমাদের ছেড়ে দেবার আশ্বাস দিয়ে পরিবারকে ডেকে ১৩ ঘণ্টা বসিয়ে রাখা হয় এবং মিডিয়ায় মিথ্যা স্টেটমেন্ট দেয়ানো হয়। আমাদের শিক্ষকরা দেখা করতে আসলে দেখা করতে দেয়া হয়নি।

অন্যায়ভাবে সমন্বয়কদের আটক, সারাদেশে শিক্ষার্থীদের গ্রেফতার-নির্যাতনের প্রতিবাদে গত ৩০ জুলাই রাত থেকে সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম, আসিফ মাহমুদ ও আবু বাকের ডিবি অফিসে আটক অবস্থায় অনশন কর্মসূচি শুরু করেন। পরবর্তীতে সে খবর জানামাত্র সারজিস আলম, হাসনাত আব্দুলাহ ও নুসরাত তাবাসসুমও অনশন শুরু করেন। অনশনের কথা পরিবার ও মিডিয়া থেকে গোপন করা হয়। প্রায় ৩২ ঘণ্টারও অধিক সময় অনশনের পরে ডিবি প্রধান ছয় সমন্বয়ককে মুক্তির চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দিলে তারা অনশন ভাঙেন বলে বিবৃতিতে উল্লেখ করেন।

তারা আরও বলেন, আমাদেরকে ১ আগস্ট দুপুর দেড়টায় পরিবারের জিম্মায় ছেড়ে দেয়া হয়। গত সাতদিন ডিবি অফিসে আমাদের ও আমাদের পরিবারের সাথে নানা হয়রানি, নির্যাতন ও নাটক মঞ্চস্থ করা হয়েছে। আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীর নির্দেশেই অন্যায়ভাবে আটকে রাখা হয়েছিল জানিয়ে তারা বলেন, সরকার আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে ছাত্র-নাগরিকের মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে দিয়েছে। সরকার এখনও শিক্ষার্থীদের উপর দমননীতি অব্যাহত রেখেছে এবং সারাদেশে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের গ্রেফতার ও নির্যাতন করছে এবং শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে বাধা প্রদান করছে।

এদিকে যৌথ বিবৃতির শেষ পর্যায়ে তারা বলেন, ছাত্র-নাগরিক হত্যার বিচার ও আটককৃত নিরপরাধ ব্যক্তিদের মুক্তির দাবিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে। সারাদেশে ছাত্র-নাগরিকদের প্রতি আহ্বান থাকবে সরকারের মিথ্যা প্রোপাগাণ্ডা ও দমন-পীড়নকে তোয়াক্কা না করে রাজপথে নেমে আসুন। শহীদের রক্ত বৃথা যাবে না।

শেয়ারঃ

এই জাতীয় অন্যান্য সংবাদ
© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত © ২০২৪
Developed By UNIK BD