কোটা সংস্কার আন্দোলনের সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে ঢাকা টাইমসের সাংবাদিক হাসান মেহেদীসহ নিহত সাংবাদিকদের হত্যার বিচারের দাবিতে ৪৮ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়েছেন সাধারণ সাংবাদিকেরা।
আজ শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজার মোড়ে ‘গণমাধ্যম কর্মীদের নিরাপত্তার দাবি’তে আয়োজিত মানববন্ধনে বক্তারা এ দাবি জানান।
এ সময় মানববন্ধনে অংশ নেওয়া আহত সাংবাদিকেরা নিজেদের অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন। ফটো সাংবাদিক শামিম আহমেদ বলেন, ‘মিরপুর ১০ নম্বর এলাকায় আমার ওপর একাধিকবার হামলা হয়েছে। আমার ওপর কোনো ছাত্র হামলা করেনি। বরং ছাত্রলীগ ও যুবলীগের লোকজন আমাকে ঘিরে ধরে মারধর করেছে।’
যমুনা টিভির সিনিয়র রিপোর্টার রাব্বি সিদ্দিকী বলেন, ‘আমরা সাধারণ সাংবাদিকেরা আসলে কোথায় যাব! আমাদের নিরাপত্তা দেবে কে? আমরা আমাদের চারজন ভাইকে হারালাম। বহু ভাই–বোন আহত। রাষ্ট্র কি তাঁদের খোঁজ নিয়েছে? এমনকি খোঁজ নেওয়ার প্রয়োজন মনে করেনি।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা যে ক্ষত বয়ে বেড়াচ্ছি, যে ট্রমার মধ্যে আমরা প্রত্যেক গণমাধ্যম কর্মী, আমরা প্রতিটি মুহূর্তে আতঙ্কে আছি। এটা কবে কাটবে!’
মানববন্ধনে সাংবাদিক নেতাদের সমালোচনা করে বক্তারা বলেন, সাংবাদিক নেতারা শুধু টেলিভিশনের টকশোতে এসে সাংবাদিকদের অধিকার আদায়ের যে গালগল্প করেন সেটি শুধুই তাঁদের স্বার্থ হাসিলের জন্য। বাস্তবে তাঁরা কিছুই করেন না। বরং তাঁরা মাঠের সাংবাদিকদের মাথা বিক্রি করে চলেন। বাস্তবে তাঁরা সাংবাদিকদের অধিকার আদায়ে কিছুই করেন না।
মানববন্ধনে বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার অ্যাসোসিয়েশনের (ক্র্যাব) যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক দীপন দেওয়ান বলেন, ‘সাংবাদিক হত্যা–নির্যাতনে জড়িতদের ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে চিহ্নিত করে তাঁদের বিচার করতে হবে। বেঁধে দেওয়া এই সময়ের মধ্যে কার্যকর পদক্ষেপ না নিলে কঠোর কর্মসূচির ঘোষণা দেবেন গণমাধ্যমকর্মীরা।
উল্লেখ্য, কোটা আন্দোলনকে ঘিরে দায়িত্ব পালনকালে অন্তত চারজন সাংবাদিক নিহত হওয়ার তথ্য পাওয়া গেছে। তাঁরা হলেন– সিলেট নগরের বন্দরবাজার এলাকায় দৈনিক নয়া দিগন্তের সিলেট ব্যুরো প্রধান এটিএম তুরাব (৩৪), অনলাইন সংবাদমাধ্যম ঢাকা টাইমসের জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক মেহেদী হাসান (৩১), দ্য রিপোর্টের সাবেক কনটেন্ট ক্রিয়েটর তাহির জামান প্রিয় ও দৈনিক ভোরের আওয়াজ পত্রিকার গাজীপুরের গাছা থানা প্রতিনিধি মো. শাকিল হোসেন।