রাজধানীর উত্তরায় শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পুলিশ ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। একপর্যায়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সাউন্ড গ্রেনেড ও টিয়ারগ্যাসের শেল নিক্ষেপ করে পুলিশ। শিক্ষার্থীদের গণমিছিলকে কেন্দ্র করে পুরো উত্তরা এলাকায় পুলিশের অতিরিক্ত নিরাপত্তা ছিল। মিছিলের একপর্যায়ে পুলিশের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ হয়।
এ ঘটনায় শিক্ষার্থীসহ অনেকে হতাহত হয়েছেন। এসময় কয়েকজনকে হেলমেট পরে অস্ত্র হাতে গুলি ছুড়তে দেখা গেছে বলে জানিয়েছেন অনেকেই। হেলমেট পরে গুলি ছোড়ার কয়েকটি ছবি ফেসবুক সহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। এক ছবিতে দেখা গেছে, লাল হেলমেট ও কালো গেঞ্জি পরা এক যুবক গুলি ছুড়ছেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, শুক্রবার (২ আগস্ট) বিকেল সোয়া চারটার পর আওয়ামী লীগ সমর্থকরা মাইলস্টোন কলেজের দিকে থাকা শিক্ষার্থীদের ধাওয়া দেন। শিক্ষার্থীরাও পাল্টা ধাওয়া দেন।
এসময় পুলিশও শিক্ষার্থীদের ধাওয়া দেয় এবং সাউন্ড গ্রেনেড ও কাঁদানে গ্যাসের শেল নিক্ষেপ করে। এতে শিক্ষার্থীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে যান। আরেক ছবিতে সাদা-কালো হেলমেট ও সাদা গেঞ্জি পরা এক যুবকতে শটগান হাতে দেখা যায়। অস্ত্র হাতে গুলি ছোড়া ব্যক্তিদের পরিচয় নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
এদিকে, নয় দফা দাবি আদায়ে রবিবার (০৪ আগস্ট) থেকে লাগাতার ‘সর্বাত্মক অসহযোগ’ আন্দোলনের ডাক দিয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। এর আগে শনিবার (৩ আগস্ট) সারাদেশে বিক্ষোভ মিছিল করবে তারা। শুক্রবার রাতে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন।
বিবৃতিতে আরো বলা হয়, ‘সারাদেশে ছাত্র-নাগরিকদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে হামলা করে হত্যার প্রতিবাদে এবং ৯ দাবিতে শনিবার সারাদেশে বিক্ষোভ মিছিল ও রবিবার থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য ‘সর্বাত্মক অসহযোগ’ আন্দোলনের ডাক দেয়া হলো। বিবৃতিতে, সারাদেশের আপামর জনসাধারণকে অলিতে-গলিতে, পাড়ায় পাড়ায় সংগঠিত হয়ে কর্মসূচি সফল করার আহ্বান জানানো হয়।
এর আগে শুক্রবার রাত আটটার দিকে ফেসবুকে লাইভে এই কর্মসূচির বিষয় ঘোষণা করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক আব্দুল হান্নান মাসউদ। শুক্রবারও (২ আগস্ট) বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকারীদের ডাকে গণমিছিল ও দ্রোহযাত্রায় উত্তাল ছিল রাজপথ। জুমার নামাজের পর রাজধানীর সায়েন্সল্যাব থেকে মিছিল বের করেন বিক্ষোভকারীরা। নয় দফা দাবিতে স্লোগান দেন তারা। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার হুঁশিয়ারি দেন শিক্ষার্থীরা।