তাদের বেশিরভাগই গুলিবিদ্ধ।
নিহতদের মধ্যে চারজনের মরদেহ জেলা শহরের তমিজ মার্কেট এলাকায় সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও সাবেক যুবলীগ নেতা এ কে এম সালাহ উদ্দিন টিপুর বাসার সামনে পড়ে থাকতে দেখা বলে জানিয়েছে প্রত্যক্ষদর্শীরা। নিহত চারজন যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মী। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকারীদের হামলায় এরা নিহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।
নিহত চারজনের মধ্যে দুইজনের পরিচয় নিশ্চিত হওয়া গেছে। এদের একজন সদর উপজেলার টুমচর ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক এবং ওই ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য (মেম্বার) হারুনুর রশিদ, আরেকজন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান টিপুর গাড়িচালক রাসেল। বাকি দুইজনের নাম-পরিচয় জানা যায়নি। তাদের মরদেহ সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা পর্যন্ত সড়কে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে থাকতে দেখা যায়।
আন্দোলনকারীরা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এ কে এম সালাহ উদ্দিন টিপু ও তার বাবা সাবেক পৌর মেয়র প্রয়াত আবু তাহেরের বাস ভবনে আগুন দিয়েছেন। এ সময় বাসার ছাদে অনেকেই আটকা পড়েছেন। ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা আগুন নেভাতে গেলে আন্দোলনকারীদের বাধার মুখে পড়ে। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত সেখানে আগুন জ্বলছে বলে জানা গেছে। আন্দোলনকারীরা বাসভবন ঘেরাও করে রেখেছেন।
আন্দোলনকারীদের অভিযোগ, দুপুর থেকে বিকেল পর্যন্ত বাসভবনের ছাদের ওপর থেকে চেয়ারম্যান টিপু ও তার লোকজন আন্দোলনকারীদের লক্ষ্য করে গুলিবর্ষণ করেন।
এদিকে জেলা সদর হাসপাতালে গুলিবিদ্ধ নিহত তিনজনের মরদেহ মর্গে রাখা হয়েছে।
তারা হলেন, রায়পুর উপজেলার আবদুল গণির ছেলে ওসমান গণি, সদর উপজেলার উত্তর জয়পুর গ্রামের কাওসার ওয়াহেদ, ভবানীগঞ্জ ইউনিয়নের শরীফপুর গ্রামের আমির হোসেনের ছেলে ছাবির হোসেন। এছাড়া আফনান পাটয়ারী নামের এক শিক্ষার্থী আহত অবস্থায় ঢাকায় নেওয়ার পথে মারা যান। তার বাড়ি জেলা শহরের পৌর বাস টার্মিনাল এলাকায়। এরা সংঘর্ষে মারা গেছে বলে জানা গেছে।
অন্যদিকে লক্ষ্মীপুরের সংঘর্ষ ও রণক্ষেত্রের ঘটনা নিয়ন্ত্রণে পুলিশ সদস্যদের কোনো ভূমিকা লক্ষ্য করা যায়নি। ফোন কল করেও পুলিশের কোনো কর্মকর্তার বক্তব্যও পাওয়া যায়নি।
এদিকে রোববার রাতে ৮টার দিকে জেলার পরিস্থিতি নিয়ে জেলা প্রশাসক সুরাইয়া জাহান বলেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে চার প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হবে। তারা (বিজিবি) ফেনী থেকে আসছে
তিনি জানান, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সালাহ উদ্দিন টিপুর বাসভবনে আগুন জ্বলছে। আন্দোলনকারীরা ওই এলাকা ঘিরে রেখেছে। সেনাবাহিনীর সদস্যরা এবং পুলিশ যৌথভাবে সেদিকে মুভ করবে। আগুন নিয়ন্ত্রণ এবং বাসায় আটকা পড়াদের উদ্ধারে তারা কাজ করবে।
তিনি আরও বলেন, আমরা সহিংসতা ছাড়াই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করছি। সন্ধ্যা ৬টা থেকে অনির্দিষ্ট সময়ের জন্য কারফিউ জারি করা হয়েছে।