যদিও বছরের শ্রেষ্ঠতম সময় পবিত্র রমজান। কোন কিছু দিয়ে রমজানের তুলনা করা সম্ভব নয়। এ মাসের প্রতিটি মুহূর্ত অফুরন্ত কল্যাণের। যে সময় চলে যায় তা যারা কাজে লাগাতে পারে তারা সফল, আর যারা হেলায় ফেলায় কাটিয়ে দেয় তারা বড় দুর্ভাগা। আজকের আলোচনায় আমরা জানব, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এমন কোন রোজাদারদের সম্পর্কে অভিসম্পাত করেছেন।
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “যে ব্যক্তি এ মাসে একটি নফল কাজ করবে সে যেন অন্য মাসের একটি ফরজ আদায় করল, আর যে ব্যক্তি এ মাসে একটি ফরজ আদায় করবে সে যেন অন্য মাসে ৭০ টি ফরজ সম্পাদন করল।”
হযরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু বর্ণনা করেছেন,রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “যেকোনো নেক কাজ যদি আদম সন্তান করে, তাহলে তার জন্য ১০ থেকে ৭০০ গুণ পর্যন্ত সওয়াব লিপিবদ্ধ করা হয়। তবে আল্লাহ তাআলা বলেছেন, এই ফজিলত রোজার ক্ষেত্রে ধর্তব্য নয়, কেননা রোজা আমারই জন্য রাখা হয় এবং আমি তার প্রতিদান দেব।”
রোজা পালনকারী আল্লাহর জন্য পানাহার পরিত্যাগ করে। রোজার জন্য দুটি আনন্দ রয়েছে – এক ইফতারের সময়, দুই রবের সঙ্গে সাক্ষাতের সময়। আর রোজা পালনকারীর ক্ষুধাজনিত কারণে নির্গত মুখের গন্ধ আল্লাহ তাআলার কাছে কস্তুরীর সুগন্ধি থেকেও অধিক পছন্দনীয়।
মহান আল্লাহ এই মাসকে পাপমোচনের মাস হিসেবে সৃষ্টি করেছেন। যারা এই মাসের পবিত্রতা রক্ষা করে মহান আল্লাহর ইবাদতে মগ্ন থাকে, মহান আল্লাহ তাদের গুনাহ গুলোকে ক্ষমা করে দেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ, এক জুমা থেকে আরেক জুমা, এক রমজান থেকে আরেক রমজান, মধ্যবর্তী সময়ের গুনাহগুলো মুছে দেয়, যদি সে কবিরা গুনাহ থেকে বাঁচে।”
সেখান থেকে অবতরণের পর তাকে জিজ্ঞেস করা হয়, আপনি তিনবার আমিন কেন বললেন? জবাবে নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, “আমার কাছে জিব্রাইল এসে বললেন, ওই ব্যক্তির ধ্বংস হোক, যার কাছে আমার নাম উচ্চারণ করা হলে সে আমার দরুদ পাঠ করেনি।”
এরপর তিনি বলেন, “ওই ব্যক্তির ধ্বংস হোক, যে রমজান মাস পেল কিন্তু পাপমোচনের আগেই তা অতিবাহিত হলো।” এবং, “ওই ব্যক্তির ধ্বংস হোক, যে বাবা-মাকে বার্ধক্যে পেল, কিন্তু সেবার মাধ্যমে তারা তাকে জান্নাতে প্রবেশ করাতে পারলো না।”
এমন সময় এসেছে, যখন আমাদের জীবনে অনেকগুলো রমজান পার হয়ে গেছে। আমাদের জীবন থেকে অনেক রমজান অতিবাহিত হয়ে গিয়েছে। আমরা কতটুকু কাজে লাগাতে পেরেছি, তা হিসাব করা অত্যন্ত জরুরি। কারণ আমরা কেউই জানি না, মহান আল্লাহ আরেকটি রমজান পর্যন্ত আমাদের হায়াত রেখেছেন কিনা। যদি এই রমজানেই আমাদের অতীতের গুনাহ মাফ না করিয়ে নিতে পারি, তাহলে নবীজির সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর অভিশাপের পাত্র হয়ে যাব।