চাঁদপুরে কর্মরত থাকাকালে সদর উপজেলার চান্দ্রা ইউনিয়নের একজন ব্যবসায়ীকে ইয়াবা দিয়ে ফাঁসানোর অভিযোগে চাঁদপুর মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক এ কে এম দিদারুল আলমসহ সাতজনের নামে মামলা হয়। আমলি আদালতে মামলাটি করেন চাঁদপুর সদর উপজেলা চান্দ্রা চৌরাস্তার বস্ত্র ব্যবসায়ী জহির মিজি। এছাড়াও জানা যায় তার বিরুদ্ধে এর পূর্বে নারী কেলেঙ্কারির ঘটনায় আরেকটি অভিযোগ করা হয়। সেই অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত টিম গঠন করা হয়। পরে এর সত্যতা পেয়েছেন তদন্তকারী কর্মকর্তাগণ। এসকল কর্মকাণ্ডের কারণে জেলার স্থানীয় পত্রিকা ও জাতীয় পত্রিকায় একাধিক সংবাদ প্রকাশিত হয় তার বিরুদ্ধে।
পরে বিভিন্ন অভিযোগের প্রেক্ষিতে এডি দিদারুল আলমের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা দায়ের করা হয় এবং তাকে জামালপুর বদলি করার নির্দেশ দেওয়া হয়।পরবর্তীতে পুনরায় আবারো তিনি চাঁদপুরে এসে দ্বিতীয় মেয়াদে যোগদান করেন। দ্বিতীয়বার যোগদানের পরই আরো ভয়ংকর রূপে আবির্ভূত হন দিদারুল। চাঁদপুর শহরের ইয়াবার গডফাদার মো. শাহজাহান প্রঃ বাঘ শাহজাহান এর বসতঘরে ২ হাজার পিস ইয়াবা ট্যাবলেট মজুদ রয়েছে মর্মে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযানের উদ্দেশ্যে তার বাড়িতে গেলেও অদৃশ্য কারণে সেগুলো উদ্ধার না করার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। দিদারুল উক্ত মাদক ব্যবসায়ী ও তাহার স্ত্রীর সাথে কিছু সময় একান্ত কথা বলে বসতঘর তল্লাশী না করার জন্য নির্দেশ দেন সঙ্গীয় ফোর্সদেরকে। পরের দিন মাদক ব্যবসায়ী ও তাহার স্ত্রীসহ সহকারী পরিচালকের অফিস রুমে একান্ত সাক্ষাত করেন তারা। পরবর্তীতে তাদের অবৈধ ব্যবসা চালিয়ে যান।
এ ধরনের মাদক বিক্রেতাদের আঁতাত ও বিভিন্ন রকম সহযোগিতা ও নিম্নস্ত কর্মকর্তাদের সাথে খারাপ ব্যবহার করেন তিনি। অফিসের পরিবেশ নষ্ট ও ক্ষমতার অপব্যবহার করার কারণে সকলের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ ও অসন্তোষ দেখা যায়। এসব কারণে তার বিরুদ্ধে ঢাকা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর অতিরিক্ত মহাপরিচালক ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের পরিচালক (অপারেসন্স) এর বরাবর অভিযোগ প্রেরণ করেন তার অধীনস্থ কর্মকর্তারা।
পরবর্তীতে তিনি কক্সবাজার মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর সহকারী পরিচালক হিসেবে যোগদান করেন চলতি বছরের ২৫ জানুয়ারি। বিতর্কিত এডি দিদারুল যোগদানের পরেই আলোচিত ওসি প্রদীপের মত ভয়ংকর রূপে আবির্ভাব হয়।
সম্প্রতি কক্সবাজারে এক সাংবাদিককে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে এ, কে, এম দিদারুল আলমের বিরুদ্ধে। অভিযোগ রয়েছে, আটক এক আসামিকে শিখিয়ে স্থানীয় অনলাইনে লাইভ সম্প্রচার করা হয়েছে, যা কক্সবাজার মাদকদ্রব্য অধিদপ্তরের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো ঘটেছে।
এছাড়াও আরো জানা যায়, তার কার্যালয়ের একটি টিম কক্সবাজার সদরের ঝিলংজা মুক্তারকুল এলাকার বজল করিম নামে এক নিরীহ সিএনজি চালককে রোববার (৯ মার্চ) দুপুরে লিংকরোড থেকে ধরে নিয়ে নির্যাতনের পর ইয়াবা দিয়ে চালান দিয়েছে। চালকের পরিবারের দাবি, দরিদ্র সিএনজি চালককে কোনো অদৃশ্য ইশারায় ফাঁসিয়েছে মাদক টিম। এ বিষয় নিয়ে প্রতিবেশী খরুলিয়া এলাকার বাসিন্দা জাতীয় অনলাইন সময়ের কণ্ঠস্বর ও বিডি২৪লাইভ কক্সবাজার প্রতিনিধি এবং স্থানীয় দৈনিক মেহেদীর বিশেষ প্রতিবেদক শাহীন মাহমুদ রাসেল ভুক্তভোগী পরিবারের বরাত দিয়ে মাদক এডি দিদারের বক্তব্য নেন বিকেল ও সন্ধ্যায়। প্রশ্নের সঠিক জবাব দিতে না পেরে সাংবাদিক শাহীনের সাথে বাকবিতণ্ডায় জড়ান মাদক এডি দিদার।
এ ঘটনায় তার গোমর ফাঁস হবে ভয়ে, ওসি প্রদীপ স্টাইলে সাংবাদিক শাহীন রাসেলকে ফাঁসানোর অপচেষ্টার করেন এডি দিদার। সেই ছক মতে এক তরুণকে রাত নয়টার দিকে রেললাইন এলাকা থেকে ধরে এনে স্থানীয় একটি নাম সর্বস্ব পোর্টালের লাইভে সাংবাদিক শাহীনকে মাদক ব্যবসায়ী বানানোর অপচেষ্টা করেন। এই বিষয়টি স্থানীয় সাংবাদিক সহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সমালোচনার জন্ম দেয়। আর এডি দিদারুলের এমন কর্মকাণ্ডকে তারা বিতর্কিত ওসি প্রদীপের সঙ্গে তুলনা করছেন। তাদের ভাষ্যমতে, বর্তমানে কক্সবাজারে এক আতঙ্কের নাম মাদকদ্রব্যের সহকারী পরিচালক এ কে এম দিদারুল আলম। তারা মনে করেন, দিদারুলের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ না করার কারণেই তিনি অপ্রতিরোধ্য হয়ে ওঠেছেন।