তিনি উপজেলার সদর ইউনিয়নের ছোছাউড়া গ্রামের আক্কাস আলীর ছেলে। তার সাত বছর বয়সী একটি মেয়ে ও আড়াই বছরের একটি ছেলে রয়েছে। অপর দিকে ঘটনার পর থেকে অভিযুক্ত মানিক মিয়া (২৫) পলাতক রয়েছেন। তারা সম্পর্কে মামাতো-ফুপাতো ভাই।
স্থানীয় বাসিন্দা, পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, নজরুল ইসলাম তার বাড়ির পাশে একটি মুদি ও চায়ের দোকান দিয়ে ব্যবসা করে আসছিলেন। তার দোকান থেকে বাকিতে পণ্য কেনেন তাঁর ফুফাতো ভাই মানিক মিয়া। কিন্তু দীর্ঘদিন হলেও পাওনা ২০০ টাকা পরিশোধ করেননি মানিক। সম্প্রতি নজরুল তার ফুফাতো ভাই মানিককে টাকা পরিশোধ করতে বেশ কয়েকবার তাগাদা দেন। শুক্রবার সকালে মানিক নজরুলের দোকানে গেলে টাকার জন্য আবার তাগাদা দেন। এ সময় দুজনের মধ্যে কথা–কাটাকাটি ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। পরে স্থানীয় লোকজন উভয়কে থামিয়ে দেন। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে মানিক বাড়ি ফিরে যান।
ওই দিন বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে নজরুল স্থানীয় স্টেশন বাজার থেকে বাড়ি ফিরছিলেন। পথে বাড়ির পাশেই মানিক লাঠি দিয়ে নজরুলকে পিটিয়ে আহত করেন। স্থানীয় লোকজন তাকে উদ্ধার করে প্রথমে পূর্বধলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। পরে অবস্থার অবনতি হলে সেখান থেকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য শনিবার সকালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় সন্ধ্যায় নজরুল মারা যান।
নজরুলের স্ত্রী রুপা আক্তার বলেন, নজরুল একসময় মধ্যপ্রাচ্যে ছিলেন। স্ট্রোক করার কারণে তিন বছর আগে দেশে ফেরেন। জায়গাজমি না থাকায় সংসার নিয়ে বিপদে পড়েন তিনি। পরে বাড়ির সামনে একটি চায়ের দোকান দেন। দোকানের আয় দিয়েই কোনো রকমে সংসার চালাতেন। মানিক দোকান থেকে বাকি খেয়ে আর দিতেন না। অর্থকষ্টে থাকায় ২০০ টাকাই নজরুলের কাছে অনেক ছিল।
রুপা আক্তার আরও বলেন, ‘বাড়ির জায়গাটা ছাড়া আমাদের আর কিছু নেই। দুটো সন্তান নিয়ে আমি কেমন করে চলব। এ ঘটনায় মামলা লিখে থানায় জমা দিচ্ছি। আমি হত্যাকারীর বিচার চাই। যে আমার সন্তানদের এতিম করেছে, তাদের ভবিষ্যৎ কেড়ে নিয়েছে। তার বিচার চাই।’
জানতে চাইলে পূর্বধলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ রিয়াদ মাহমুদ বলেন, এ ঘটনায় পরিবারের পক্ষ থেকে মামলার প্রস্তুতি চলছে। এদিকে অভিযুক্ত মানিক মিয়াকে গ্রেপ্তারে চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।