যদিও ২০০৬ সালের লাক্স-চ্যানেল আই সুপারস্টার প্রতিযোগিতায় প্রথম রানার-আপ হয়ে আলোচনায় আসেন আফসান আরা বিন্দু। এরপর ‘দারুচিনি দ্বীপ’ দিয়ে বড় পর্দায় অভিষেক। ‘জাগো’, ‘পিরিতের আগুন জ্বলে দ্বিগুণ’, ‘এই তো প্রেম’সহ একাধিক সিনেমা ও অসংখ্য জনপ্রিয় টিভি নাটকে অভিনয় করে ছোট পর্দার অন্যতম পরিচিত মুখ হয়ে ওঠেন তিনি।
তবে ২০১৪ সালের অক্টোবরে পারিবারিক আয়োজনে আসিফ সালাহউদ্দিন মালিকের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার পর আচমকাই মিডিয়া ছাড়েন বিন্দু। দীর্ঘদিন তাকে আর অভিনয়ে দেখা যায়নি বললেই চলে। অনেকেই মনে করেছিলেন, সংসারেই পুরোপুরি ডুবে গেছেন এই অভিনেত্রী।
দীর্ঘ নীরবতা ভাঙলেন এ তারকা। সম্প্রতি মাছরাঙা টেলিভিশনের জনপ্রিয় পডকাস্ট ‘বিহাইন্ড দ্য ফেইম উইথ আরআরকে’–তে অতিথি হয়ে নিজের ব্যক্তিজীবনের অজানা অধ্যায় তুলে ধরেন বিন্দু। আলাপচারিতার একপর্যায়ে সঞ্চালক সরাসরি প্রশ্ন করেন, আপনার কি বিবাহবিচ্ছেদ হয়েছে? উত্তরে বিন্দু বলেন, ‘হ্যাঁ। আমার বিবাহবিচ্ছেদ হয়েছে।’
কবে হয়েছে, এই প্রশ্নে খানিকটা থেমে গিয়ে তিনি বলেন, ‘২০২২ সালে।’
সঞ্চালক তখন উল্লেখ করেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এখনো অনেকেই আপনাকে বিবাহিত মনে করেন। আপনার ছবি পোস্ট করে লেখা হয়, ‘বিন্দুর স্বামী’। আবার অনেকে বলেন, আপনার বিচ্ছেদ হয়েছে। এ বিষয়ে আপনি আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানাননি।
এর জবাবে বিন্দু বলেন, ‘হ্যাঁ, আমি আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানাইনি। এ কারণে অনেকে দ্বিধাগ্রস্ত। অনেকে হয়তো জিজ্ঞাসা করেন না, যদি অস্বস্তি বোধ করি! বড় সংখ্যক মানুষ মনে করেন, আমি বিবাহিত। কিন্তু আমি বিবাহিত নই। আমার সংসারের যে জার্নি সেটা অনেক ছোট ছিল। মাঝখানে অনেক বড় একটি সেপারেশন গিয়েছে।’
এরপর সঞ্চালক জানতে চান, কবে থেকে আলাদা থাকছিলেন? বিন্দুর উত্তর, ‘২০১৭ সাল থেকে।’
বিচ্ছেদের কারণ প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হলে বিন্দু বলেন, ‘আলাদা হওয়ার জন্য অনেক সময় অনেক বড় বড় ঘটনা থাকে, কারণ থাকে। আবার অনেক সময় অনেক কারণও দরকার হয় না। এখানে আরেকজন মানুষের জীবন জড়িত। আমি চাই না, বিচ্ছেদের কারণ ব্যাখ্যা দিয়ে উনাকে কোনো বিব্রতকর জায়গা ফেলি! সেইটুকু সম্মান আমি দিতে জানি।’
নিজের বিয়ে নিয়ে কথা বলতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘আমার বাবা-মা সবসময়ই বলেছেন— জন্ম-মৃত্যু-বিয়ে আল্লাহর হাতে। পারিবারিক আয়োজনে আমার বিয়ে হয়েছিল। আমার বাবা-মা, পরিবার দেখে-শুনে আমার বিয়ে দিয়েছিলেন।’
আলোচনার একপর্যায়ে বিন্দু নিজেই অভিনয় ছাড়ার প্রসঙ্গ তোলেন। সঞ্চালক বলেন, বিয়ের কয়েক মাস আগেই আপনি কাজ বন্ধ করে দিয়েছিলেন। এর পেছনে কোনো চাপ ছিল কি না?
জবাবে অভিনেত্রী বলেন, ‘কোনো চাপ ছিল না। আপনি তো জানেন আমি মাসে ৩০ দিন কাজ করতাম। সিঙ্গেল নাটক করতাম। সিরিয়ালে কখনো যুক্ত ছিলাম না। সিরিয়ালে যুক্ত থাকলে সিঙ্গেল নাটকের কাজ মিস হয়ে যেত। সে জায়গা থেকে আমার মনে হয়েছে, একজন সাধারণ মানুষ যেভাবে জীবনযাপন করেন, আমি সেভাবে করতে পারিনি। পাবলিক প্লেসে যেতে পারিনি। পারিবারিক বা মামা-কাকাদের বাচ্চাদের জন্মদিনেও যেতে পারিনি। এখান থেকে মনে হয়েছে, আমি যদি সংসারে যাই, তাহলে আন্তরিকভাবে আমার সময়টা ওখানে ইনভেস্ট করতে চাই। আমার মনে হয়, এটা সব মেয়ের ক্ষেত্রেই ঘটে। কাজ ছেড়ে দেওয়ার ব্যাপারে আমাকে কেউ বাধ্য করেনি।’
দীর্ঘদিন আড়ালে থাকার পর ২০১৯ সালে রাজধানীর একটি ম্যারাথনে হঠাৎ প্রকাশ্যে দেখা যায় বিন্দুকে। এরপর ২০২২ সালে ‘উনিশ২০’ সিনেমায় অভিনয় করেন তিনি, যেখানে তার বিপরীতে ছিলেন আরিফিন শুভ। যদিও এরপর আর নিয়মিত অভিনয়ে ফেরেননি এই অভিনেত্রী







